সরকার হঠাতে ‘ন্যূনতম দফা’ দিতে চায় বিএনপি

9

সরকার হঠানোর যুগপৎ আন্দোলন আরও জোরদারের পাশাপাশি সমমনা জোটের সঙ্গে মিলে ‘ন্যূনতম দফার’ আন্দোলনে যেতে চায় বিএনপি। গতকাল শুক্রবার এমনই এক জোট গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজো কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিকাল ৪টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক চলে দুই ঘণ্টার বেশি। এতে বিএনপি মহাসচিব অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
জাতীয় নির্বাচনের এক বছর আগে বিভিন্ন দাবিতে অক্টোবর থেকে দেশের বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোতে সমাবেশের পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশ থেকে ১০ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। এসব দাবিকে সামনে রেখে সমমনা জাতীয়তাবাদী জোটের সঙ্গে মিলে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশজুড়ে ও ঢাকায় চারটি কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এসব দাবির পাশাপাশি ২৭ দফা কর্মপরিকল্পনাও এক সেমিনারে তুলে ধরা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।
গতকাল বিফ্রিংয়ে ফখরুল এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ন্যূনতম দফা নির্ধারণে আমাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, আলোচনা চলছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা ন্যূনতম দফার বিষয়টা একটা যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে অচিরে আপনাদের কাছে আসবে। এ বিষয়ে আর খোলাশা করে কিছু বলেননি বিএনপি মহাসচিব। খবর বিডিনিউজ’র
তিনি বলেন, সভায় যুগপৎ আন্দোলন সফল করতে গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপির নেওয়া আগের কর্মসূচিগুলো পর্যালোচনা এবং পরবর্তি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চলমান এ আন্দোলনে যুক্ত অন্যান্য জোট ও দলগুলোর সঙ্গেও বিএনপি এরকম পর্যালোচনামূলক আলোচনা করবে বলে জানান তিনি।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, চলমান কর্মসূচি ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ করে’ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে পেশ করতে আলোচনা চলছে। আগের কর্মসূচিগুলোর ভিত্তিতে নতুন কী করা যায় সেজন্য নীতিগত ও কৌশলগত আলোচনা হয়েছে।
তাদের পক্ষ থেকে ঢাকায় কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এটাকে সমর্থন করেছি। ভালো কর্মসূচি হয়েছে। এটার মধ্য দিয়ে আমরা সামগ্রিকভাবে সেই প্রোগ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করব যাতে একটা অভ্যুত্থানে দিকে আমরা ধীরে ধীরে যেতে পারি।
খুব শিগগির আন্দোলনে সফল হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মূল স্পিরিটটা হচ্ছে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মুচলেকা নিয়ে বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) এতদিন ধরে জার্নালিজম করছেন কখনও ঘুনাক্ষরে কারও কাছ থেকে শুনেছেন এধরনের কথা। উনি (শেখ সেলিম) এটা তৈরি করে ফেললেন আর এটা হয়ে গেল। সেটাই আপনারা বলছেন।
বৈঠকে গণতন্ত্র লিয়াজো কমিটির সদস্য গণতন্ত্র মঞ্চের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বৈঠকে অংশ নেন।