সরকার দেউলিয়া হয়ে মানুষের পকেট কাটছে : বিএনপি

5

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের ‘অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতির খেসারত’ জনগণকে দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী সিন্ডিকেটদের মুনাফা পাইয়ে দিতেই সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে আবারো দাম বাড়িয়েছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছে। সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন।
এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে। খবর বিডিনিউজের।
রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন রিজভী।
‘লুটপাটের কারণে’ সরকারের পকেটে টান পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি ও অনুরোধ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে গ্যাস বিদ্যুৎ-জ্বালানি-পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। লুটেরা ডামি সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট শূন্য করার নীতি গ্রহণ করেছে।
বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা পর্যন্ত বাড়বে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম ইউনিট প্রতি বাড়ানো হয়েছে ৭৫ পয়সা।
এই মূল্য বৃদ্ধির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, অস্ট্রেলিয়া-কানাডার বেগমপাড়ায় দামি বাড়ি-গাড়ির জন্য টাকা দরকার। এজন্যই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি। দ্রব্যমূল্যে আওয়ামী পাগলা ঘোড়ার ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চিকিৎসা, লেখাপড়া, বিনোদন, কাপড়চোপড় এমনকি খাওয়ার খরচ মেটাতে না পেরে অসীম হতাশায় দিন যাপন করছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন।
‘মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবরে বিভ্রান্তি রোধে’ আইন করার বিষয়ে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ডামি সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেছেন, মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে আইন আনা হবে। অলরেডি একটি আইন আছে যেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আরো কিছু আইন তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে।
অর্থাৎ নাগরিকদের ওপর নজরদারি আরও তীব্র হবে, এটি সমগ্র জাতিকে পর্যবেক্ষণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রণয়নের আলামত। মূলত, সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে, সেজন্যই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার। নির্বাচনি ব্যবস্থাকে কলুষিত করে জবাবদিহিতাহীন অসীম ক্ষমতাশালী ডামি সরকার মানুষের ন্যূনতম অধিকার দিতে রাজি নয়। এদের কাছে জনগণ নিতান্তই গৌণ, উপেক্ষিত তাচ্ছিল্যের একটি বিষয়।
বর্তমানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ‘ছিটেফোঁটাও নেই’ মন্তব্য করে এ বিএনপি নেতা বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য নানাভাবে কাজে লাগিয়ে তাদের মিথ্যা জয়গান প্রচার করেও শান্তি পাচ্ছে না তারা। তারপরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশি ও বিদেশি কিছু মিডিয়ায় তাদের অনেক অপকর্ম প্রকাশিত হয়। সেটিও যাতে প্রকাশ হতে না পারে সেজন্য কিছুদিন আগে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।