সরকারের বেঁধে দেয়া দামে নিত্যপণ্য মিলে না বাজারে

22

ফারুক আবদুল্লাহ

বিশ্ববাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু ঘোষণা দেওয়া হলেও বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি তা কার্যকরে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপও নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ফলে এর সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। গত ছয় মাসের বেশি সময় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বেচাকেনা হচ্ছে চিনি ও পাম তেল।
এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর চিনি ও পাম তেলের দাম কিছুটা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। গত রোববার থেকে এ দর কার্যকর হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পাম সুপার নামে খোলা ভোজ্যতেলের খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ দর হবে লিটারপ্রতি ১৩৩ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ দর কেজিপ্রতি ৮৪ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ দর হবে ৮৯ টাকা।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে মিলগেট ও পরিবেশক পর্যায়েও পণ্য দুটির বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মিলগেটে পাম অয়েল লিটারপ্রতি ১২৮ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ১৩০ টাকায় বেচাকেনা হবে। খোলা পরিশোধিত চিনি প্রতি কেজি মিলগেটে বেচাকেনা হবে ৭৯ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ৮১ টাকায়। এ ছাড়া পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনি মিলগেটে ৮২ টাকা এবং পরিবেশক পর্যায়ে ৮৪ টাকায় বেচাকেনা হবে। কিন্তু বাজারে এর প্রভাব পুরোপুরি দেখা যায়নি। পাম তেলের দর কিছুটা কমলেও আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে চিনি।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল। অন্যদিকে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর খোলা চিনির সর্বোচ্চ দাম কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে এই পণ্য দুটি গত ছয় মাসের বেশি সময় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বেচাকেনা হচ্ছে।
নগরীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাম তেলের দাম কমেছে সামান্য। তবে পাইকারিতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জে গতকাল সোমবার পাম তেল মণপ্রতি ৩৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কম। তবে চিনি আগের মতোই বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ এবং প্যাকেটজাত চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে মণপ্রতি চিনি বিক্রি হয়েছে ৩২২০ টাকায়, যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি। একমাস আগে মণপ্রতি চিনির দাম ছিল ৩০৫০ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার চিনি ও পাম তেলের দাম নির্ধারণ করে দিলেও পাইকারি বাজারে না কমলে খুচরায় এর প্রভাব পড়বে না।
বহদ্দারহাটের একাধিক দোকানদার জানান, সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করা সম্ভব না। সোমবার খুচরায় কেজিপ্রতি চিনি ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমাদের কেনা দাম অনেক বেশি। তাই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। তবে পাইকারি দাম কমলে আমাদের এখানে দাম কমবে।
এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যমূল্য নিয়ে প্রস্তুত করা দৈনন্দিন প্রতিবেদনেও পণ্য দুটি বাড়তি দামে বিক্রি হওয়ার তথ্য দেখা গেছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী লিটারপ্রতি সুপার পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। গত সপ্তাহেও এই দরে বিক্রি হয়েছিল। চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি ৮৮ থেকে ৯০ টাকা।