সরকারি হচ্ছে চট্টগ্রামের ২০ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীর চাকুরি

119

নিজস্ব প্রেিতবদক

প্রত্যেক উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সালে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হয়। তবে জাতীয়করণ হলেও আত্তীকরণ হয়নি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি। সারাদেশে জাতীয়করণ হওয়া ৩২৪টি কলেজ ও ৩৫০টি স্কুলে মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ১০০টি স্কুল-কলেজের শিক্ষক কর্মচারীর চাকরি আত্তীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৮টি কলেজ এবং ৩২টি স্কুল।
চট্টগ্রামে সরকারিকরণ হওয়া কলেজগুলো হলো লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সরকারি মহিলা (ডিগ্রি) কলেজ, সীতাকুÐ মহিলা সরকারি কলেজ, আনোয়ারা সরকারি কলেজ, হাটহাজারী সরকারি কলেজ, বায়েজিদ থানার আশেকানে আউলিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ, ফটিকছড়ি সরকারি কলেজ, বাঁশখালীতে সরকারি আলাওল ডিগ্রি কলেজ, মিরসরাইয়ে সরকারি নিজামপুর কলেজ, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজ ও রাউজান সরকারি কলেজ।
অন্যদিকে সরকারি হওয়া স্কুলগুলো হলো রাউজানের আর আর এসি মডেল সরকারি হাই স্কুল, ফটিকছড়ি করোনেশন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, আনোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, হাটাহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলাম বারী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পোমরা বঙ্গবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
জানা গেছে, ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার ৯১১টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব আগামি রবিবার প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে এটি হবে প্রথম বৈঠক। সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এসব পদ সৃষ্টিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। সচিব কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি স্কুল ও একটি কলেজ জাতীয়করণ করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালে সম্মতিদান শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন পর্যন্ত ৩২৪টি কলেজকে জাতীয়করণের গেজেট জারি করা হয়েছে। তবে গত ৭ বছরে মাত্র ১০টি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি হয়েছে। প্রায় ৩৫০টি স্কুলকে জাতীয়করণের গেজেট জারি হয়েছে। বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীও এখনো সরকারি হয়নি। স্কুল-কলেজ সরকারি হওয়ার পর এরই মধ্যে প্রায় সাত হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে চলে গেছেন। সরকারীকরণের সুবিধা না পাওয়ায় অনেক কলেজ এখনো বেসরকারি কলেজের মতো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চ টিউশন ফি আদায় করছে। ফলে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এই ১০০ কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারি হলে শিক্ষা প্রশাসন আশা ফিরে পাবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয়করণকৃত কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণের কাজ অধিদপ্তর থেকে শেষ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি সরকারীকরণের প্রস্তাব সচিব কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশা করি এখন নিয়মিত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারীকরণের গেজেট জারি হতে থাকবে। কলেজ জাতীয়করণের গেজেট যেদিন জারি হয়েছে সেদিন পর্যন্ত যাদের বয়স ৫৯ বছর ছিল, তারা সরকারীকরণের সুবিধা পাবেন।