সরকারবিরোধী আন্দোলনে মদদ, হংকংয়ে ব্যবসায়ী-রাজনৈতিক কর্মীসহ গ্রেপ্তার ১৫

39

হংকংয়ে গত বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনে মদদ দেয়ার অভিযোগে পুলিশ শহরটির সুপরিচিত এক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মীসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখন্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের একটি বিলকে ঘিরে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে চীননিয়ন্ত্রিত হংকংয়ে সরকারবিরোধী তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। টানা কয়েক মাসের বিক্ষোভ ও সহিংসতায় শহরটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কর্তৃপক্ষ পরে বিলটি প্রত্যাহারে বাধ্য হয়।
বিবিসি জানায়, বিতর্কিত ওই বহিঃসমর্পণ বিলবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করা, আইন অমান্য ও বিক্ষোভে অংশ নেয়ার অভিযোগে হংকংয়ের পুলিশ শনিবার ‘গণতন্ত্রপন্থি’ হিসেবে পরিচিত সাবেক-বর্তমান বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মিডিয়া টাইকুন জিমি লাই এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ৮১ বছর বয়সী মার্টিন লি-ও আছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। ৭১ বছর বয়সী লাই চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতেও অবৈধ সমাবেশ করা ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। বেইজিংবিরোধী পত্রিকা অ্যাপল ডেইলির এ প্রতিষ্ঠাতার সম্পদের পরিমাণ ৬৬ কোটি ডলারের বেশি বলে ২০০৯ সালে ফোর্বসের দেওয়া এক হিসাবে জানানো হয়েছিল।
শনিবার গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে হংকংয়ের পুলিশ বিস্তারিত কিছু না জানালেও আগামী মাসেই তাদের আদালতে হাজির করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কয়েকজন শনিবার সন্ধ্যাতেই জামিনে ছাড়া পান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হংকংয়ে ব্যবসায়ী ও ‘গণতন্ত্রপন্থি’ রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ‘যুক্তরাষ্ট্র হংকংয়ের এ গণতন্ত্রপন্থি কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে,’ বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও। বেইজিংয়ের এই আচরণ ১৯৯৭ সালের চীন-যুক্তরাজ্য যৌথ ঘোষণার পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ২৩ বছর আগের ওই ঘোষণার মাধ্যমেই যুক্তরাজ্য হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করে। সেসময়ই যুক্তরাজ্য শহরটির স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল। চীন পম্পেওর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হংকংয়ের ‘সমস্যা সৃষ্টিকারীদের’ যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বিবৃতিই তার প্রমাণ। ওয়াশিংটন চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বারবারই হস্তক্ষেপ করে আসছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেছে তারা।