সমবায় কর্মকর্তার উদ্দেশে চিরকুট লিখে নারীর আত্মহত্যা

4

রাউজান প্রতিনিধি

রাউজানে চিরকুট লিখে জুবলি আকতার (২৮) নামে সমবায় সমিতির এক নারী কর্মী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় রাউজান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোবারকখীল গ্রামের মনো সারাং বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের সঙ্গে তিন পৃষ্ঠার একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ। আত্মহননকারী জুবলি ওই এলাকার আবদুস সালামের মেয়ে।
জানা যায়, গত ৮ বছর আগে জুবলি আকতারের সঙ্গে কদলপুর ইউনিয়নের সোমবাইজ্জা হাট এলাকার জনৈক আজিজের বিয়ে হয়। বিয়ে বছর না পুরোতেই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। গর্ভের সন্তানের আশায় আর বিয়েতে বসেনি ওই নারী। ছেলে সন্তান ভ‚মিষ্ট হওয়ার পর বেঁচে থাকার জন্য বৈশাখী শ্রমজীবী সমবায় সমিতিতে হিসাব রক্ষকের চাকুরিতে যোগদান করেন। তার ছেলে জিদানের বর্তমান বয়স ৮ বছর।
তার মরদেহের সঙ্গে পুলিশ যে চিরকুট উদ্ধার করেছে সেখানে লেখা আছে- ‘স্যার ওবাইদুল হক (উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা), আসসালামু আলাইকুম। স্যার ওরা আমাকে এই পৃথিবীতে আর থাকতে দিল না। বৈশাখীর (সমবায় সমিতি) জন্য আমি এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে বাধ্য হলাম। আপনার থেকে পাওনা ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকাগুলো মাকে দিয়ে দিবেন, প্লিজ স্যার। আমার মা যেন যারা টাকা পাবে তা পরিশোধ করতে পারে। আপনি দশ দিনের মধ্যে দিয়ে দিবেন স্যার প্লিজ’।
আরেক পৃষ্ঠায় লিখা আছে- ‘আমি যদি মারা যাই তার একমাত্র দায় হলো বৈশাখী অফিসের মালিক পপি, সাগর, অপুল, পপির বাবা আবদুল খাইয়ুম। ওরা সবাই মিলে আমার মাথায় মিথ্যা অপবাদ দেয়। পপির বরের সাথে আমার সম্পর্ক আছে অপবাদ দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয়। আমি নিজে অফিস নিতে চাইলে সেখানে বাধা দেয়, অন্য অফিসে কাজ নেওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়। ওরা আমার বেঁচে থাকার সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আর কোনো উপায় না পেয়ে আমি নিজের জীবন দিয়ে গেলাম। আর এ রকম অমানুষের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির দাবি জানিয়ে গেলাম দেশের প্রচলিত আইন ও সরকারের কাছে। ইতি জুবলী’।
জুবলির টাকা পাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওবাইদুল হক বলেন, ‘আমি তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। জিলান নামে সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশনের জন্য দিয়েছিল। তিনি সেই ৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। ৪০ হাজার টাকার কথা কেন বলল বুঝতে পারছি না’।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। চিরকুটে কি লিখা আছে, এর সত্যতা যাচাই ছাড়া বলা যাচ্ছে না’।