‘সব’ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে এক পরীক্ষা

13

পূর্বদেশ ডেস্ক

আগামি শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মিলে যাতে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায়, সেজন্য এখন থেকেই সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন বিষয়ক নীতি-নির্ধারণী সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন বলে ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যখন বিদ্যমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে, সেই সময় আগামি শিক্ষাবর্ষের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর এই নির্দেশনা এলো। ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শিগগিরই কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে এ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য গঠন করা হবে ন্যাশনাল টেস্টিং অথোরিটি (এনটিএ)।
সভায় দীপু মনি জানান, একক ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও পরীক্ষা কমিটির সাথে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এইচএসসি পরীক্ষার পরে একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সূচি প্রকাশ করা হবে এবং উচ্চশিক্ষার সবক্ষেত্রে একই সময়ে ক্লাস শুরু হবে। একক ভর্তি পরীক্ষার মান বজায় রাখার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব পরীক্ষার ফলের মান নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন ওঠে না। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে এর মান নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠার সুযোগ থাকবে না’।
একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না মন্তব্য করে দীপু মনি বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্তিমূলক করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বার্থে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে’। ইউজিসি চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ সভায় বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে পাঠদান শুরু করা যাবে। একক ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে সবার কাছে এটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে। একক ভর্তি পরীক্ষার সফলতা উচ্চশিক্ষায় বিশাল একটি অর্জন হবে’। খবর বিডিনিউজের
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববদ্যিালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হাবিবুর একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সভায় একমত পোষণ করেন।
সভায় একক ভর্তি পরীক্ষার জন্য একটি কাঠামো, জাতীয় পর্যায়ে একটি নীতিমালা তৈরি ও পরীক্ষার মাধ্যমে একটি স্কোর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম। উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ ও অধ্যাপক মো. আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু ইউসুফ মিয়া এবং ইউজিসি সচিব ফেরদৌস জামান।
কোভিড মহামারিতে ভর্তিচ্ছুদের দুর্ভোগ এড়াতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়। শুরুতে ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে আসে। পরবর্তীকালে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ গুচ্ছে অংশ নেয়। তবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে গুচ্ছে আসতে রাজি করানো যায়নি।
শুরু থেকে গুচ্ছ পদ্ধতির নেতৃত্বে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এবার এ প্রক্রিয়ায় না থাকার জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের ভাষ্য, গুচ্ছ পদ্ধতিতে তারা কাঙ্খিত শিক্ষার্থী পাচ্ছেন না।