সবাই চায় শহরে পড়তে

30

আসহাব আরমান

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন কলেজে ভর্তির জন্য ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এর মধ্যে উপজেলার তুলনায় নগরীর কলেজগুলোতে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। বিশেষ করে নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে আসনসংখ্যার দুই-তিন গুণ বেশি শিক্ষার্থী ‘চয়েস’ দিয়েছেন। তবে নগরীর কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেলেও উপজেলার কলেজে পাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামে শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, হাজী মহসিন সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ, বাকলিয়া সরকারি কলেজ ও হাজেরা তজু কলেজ। তবে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ পছন্দের তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ। কলেজটি পছন্দ করেছেন ৩৩ হাজার ২৩৩ জন শিক্ষার্থী। এরপর রয়েছে সরকারি মহিলা কলেজ। বাকলিয়া কলেজ পছন্দ করেছেন ৩৩ হাজার, মহসিন কলেজ ৩১ হাজার, চট্টগ্রাম কলেজ ১৯ হাজার, মহিলা কলেজ ১৯ হাজার ২৯৯, কমার্স কলেজ ৭ হাজার ৭৯ এবং হাজেরা তজু কলেজ ১২ হাজার ৫২ জন শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. জাহেদুল হক পূর্বদেশকে বলেন, সবাই ভালো কলেজে ভর্তি হতে চায়। কিন্তু আসন ও ফলাফল বিবেচনায় সবার জায়গা হয় না। আসনের তুলনায় শিক্ষার্থী অনেক বেশি। পছন্দক্রম অনুযায়ী যে কলেজে আসন খালি থাকবে সেই কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে। শহরের কলেজে আবেদন করলেও শিক্ষার্থীরা উপজেলার অনেক কলেজ পছন্দ করেছে। ফলে শহরের কলেজে আসন না পেলে পছন্দ অনুযায়ী উপজেলার কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।
এদিকে চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট আসন রয়েছে ৫১ হাজার ৪৭৪টি। বিজ্ঞানে বিভাগের জন্য রয়েছে ১৬ হাজার ৭৫৯টি, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য ১৯ হাজার ৬৬৫টি এবং মানবিক বিভাগের জন্য আসন রয়েছে ১৫ হাজার ৫০টি। অন্যদিকে নগরের ৮টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন খালি রয়েছে ৩ হাজার ৪০০টি। মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন খালি রয়েছে ২ হাজার ৬৫০টি। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন খালি রয়েছে ৩ হাজার ৬৫০টি। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪০টি। সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৭৩৫টি। সরকারি কমার্স কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯০০ আসন রয়েছে। চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে দুই শিফটে (দিবা ও নৈশ) মোট আসন সংখ্যা ২ হাজার ১৮০টি। এছাড়া চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪০০টি। বাকলিয়া সরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৪২৫টি। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজে মোট আসন সংখ্যা ১৮০টি। চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৮৪০টি।
কলেজ পরিদর্শক মো. জাহেদুল হক জানান, কলেজের সক্ষমতা বিবেচনা করে কয়েক ধাপে আসন বাড়ানো হয়েছে। এ বছর আর আসনসংখ্যা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। এছাড়া এ বছর নগরীর ৮টি সরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৯ হাজার ৭০০টি। জিপিএ-৫ পাওয়া অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর হয়তো নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ হবে না। কিন্তু নগরীর বাইরে অনেক কলেজ আছে, সেগুলোতেও শিক্ষার মান যথেষ্ট ভালো। সেখানে ভর্তির সুযোগ হবে। সুতরাং অভিভাবকদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর রাত ১২টায় প্রথম পর্যায়ে আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়। আবেদনের সময় শেষ হলেও পুনঃনিরীক্ষায় ফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীরা ২৬ ডিসেম্বর আবেদন করার সুযোগ পাবেন। ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টায় প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১ থেকে ৮ জানুয়ারি নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে।