সবজির দামে স্বস্তি নেই মুরগির দামও বাড়তি

8

শীত শুরুর আগেই বাজারে এসে গেছে শীতকালীন সবজি। তবে স্বস্তি মিলছে না দামে। বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। শুধু কয়েকটি সবজি যেমন আলু, কচুরমূখী ও পেঁপের কেজি ৫০ টাকার নিচে। আবার গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ২০ টাকা বেড়েছে মুরগির দাম। তবে স্বাভাবিক রয়েছে মাছ ও গরুর মাংসের দাম।
গতকাল শুক্রবার নগরের রেয়াজুদ্দিন বাজারের কাঁচা বাজার ঘুরে সবজি-মাংসের দামবৃদ্ধি সংক্রান্ত এসব তথ্য জানা যায়।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি উঠছে। তাই দামও একটু বেশি। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। মানভেদে এক কেজি গাজর ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। তবে শীতের আগাম সবজি শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। এখন শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এর সঙ্গে কমেছে ঝিঙার দামও। এক সপ্তাহ আগে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঝিঙার দাম কমে এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শীতের অন্য আগাম সবজির মধ্যে ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। মূলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। এছাড়া করলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মূলা শাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আলুর কেজি ২০ থেকে ২২ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের লাউ ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ২৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নদীর চিংড়ি আকারভেদে কেজি ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। সামুদ্রিক লাল চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। এছাড়া ট্যাংরা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই (দেড় কেজি ওজনের) ৩০০ টাকা, আইর মাছ ৬০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৪০ টাকা কেজি, নদীর সরপুঁটি ৪০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা ব্রয়লার ও পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম আরও এক দফায় বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম আর সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। সে অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বিক্রি করছেন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। আর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। সে হিসাবে মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস হাঁড়সহ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকায় এবং হাঁড় ছাড়া বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। একইসাথে খাসির মাংস ৮৫০ থেকে সাড়ে ৯’শ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি ডজন লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম ডজনে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রেয়াজুদ্দিন বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. হারুন বলেন, ব্রয়লার মুরগির মতো পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও কয়েক দফায় বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম বেড়ে এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে এই মুরগি কেজিতে বিক্রি করা হয় ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায়।
দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি পূর্বদেশকে বলেন, একদিকে বাজারে মুরগি সরবরাহ কমেছে, অন্যদিকে হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ফলে মুরগির চাহিদা বাড়াতে দামও বেড়ে গেছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা বাজার কর্মকর্তা সেলিম মিয়া দৈনিক পূর্বদেশকে বলেন, কয়েকটি পণ্য ছাড়া বাকিগুলো স্বাভাবিক রয়েছে। সরকারের আমদানি ও সরবরাহের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই ৫-১০ টাকা এদিক ওদিক হয়। এরপরও আমরা বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি, কারও কোনো অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারবেন।