সবজির দামে ঊর্ধ্বগতি মাছ-মাংস স্থিতিশীল

37

বৈরী আবহাওয়া ও করোনা মহামারির ফলে নগরীর সব বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। কাঁচামরিচের দামও আকাশছোঁয়া। ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। আর গত এক মাস ধরে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বাড়ছে বিভিন্ন রকম সবজির দাম। সামনে আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
এদিকে সরবরাহ বাড়ায় কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে গত সপ্তাহের দামের মতই বিক্রি হচ্ছে লেয়ার ও সোনালী মুরগি এবং ডিম। মাছের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গাজরের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ববরটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুনের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহেও এ সবজিগুলোর দাম বেশি ছিল বলে জানান বিক্রেতারা। এছাড়াও চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫০, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কচুর লতি ৫০, লাউ ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি গত সপ্তাহের চেয়ে আরো ১০ টাকা বেড়ে ৩৩ টাকা এবং দেশি আলু কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
চৌমুহনীর সবজি ব্যবসায়ী মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, গত এক মাস ধরে বাজারে সব ধরনের সবজি অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহেই এর দাম বাড়ছে। কারণ বাজারে সবজির সরবরাহ কম।
সবজির পাশাপাশি চড়া দাম কাঁচামরিচ ও ধনেপাতার। কাঁচামরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও ধনে পাতার কেজি ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। এদিকে ডিমের দাম অপবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১০৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৩০ এবং ১০০ পিস কোয়েলের ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিম বিক্রেতা আবুল হাসান বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় উঠানামা করছে। তিনি বলেন, ফার্মে এখন ডিম উৎপাদন কম গেছে। আর বর্তমানে যে তুলনায় ডিমের চাহিদা রয়েছে সে তুলনায় উৎপাদন নেই।
অন্যদিকে মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। পাকিস্তানি সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। সামনে আরো কমতে পারে। কারণ সামনে আসছে কোরবানি ঈদ, তখন চাহিদা কমে যাবে। অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। গত সপ্তাহের মতই গরুর মাংস হাঁড় ছাড়া ৭০০ থেকে ৭৫০ ও হাঁড়সহ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে মাছের দাম বাড়েনি। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে বিভিন্নরকম দেশি মাছ। সে অনুযায়ী রুই মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, কাতলা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, বিগ হেড ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কই (ফার্ম) ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাঙ্গাস ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, বড় মাগুর ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি এবং চিংড়ি ৪৮০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ থেকে ৭৫০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় এবং ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া পূর্বদেশকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার ফলে পর্যাপ্ত সবজি শহরের বাজারে আসতে পারছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এভাবে থাকবে।