সন্দ্বীপে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের উপর হামলা

25

সন্দ্বীপ স্বাস্থ্য বিভাগে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বিল নিয়ে কারচুপি করার প্রতিবাদ করায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) গোলাম রসুলের উপর বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারী সন্দ্বীপ সরকারি হারামিয়া ২০ শয্যা হাসপাতালের অফিস ক্যাশিয়ার শিরিনের স্বামী কাজী ফরিদ। মঙ্গলবার ৭টা নাগাদ কাজী ফরিদ গোলাম রসুলের উপর অতর্কিতে হামলা করে। তাৎক্ষণিক তাকে স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট গোলাম রসুল জানান, ক্যাশিয়ার শিরিন করোনা ভ্যাকসিনের বিলে কারচুপি করার কারণে আমি প্রতিবাদ করি। শিরিন আমাকে তার স্বামী ফরিদের মাধ্যমে হামলা চালায়। এবং আমাকে হুমকি দেয় আমি যাতে সন্দ্বীপ ছেড়ে যাই। না হয় আমাকে মেরে ফেলবে। এমনকি সে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সামনে আমার উপর হামলা চালিয়েছে।
ক্যাশিয়ার শিরিনের স্বামী কাজী ফরিদ জানান, আমি উনার উপর হামলা করিনি। তবে আমার স্ত্রীর সাথে উনার বাকবিতন্ডা হওয়ার কারণে আমি এ বিষয়টি নিয়ে গোলাম রসুলকে জিজ্ঞাসা করেছি। তখন গোলাম রসুল মোবাইল বের করে রেকর্ড করতে থাকলে আমি ভুলবশত মোবাইল ফোন সরানোর জন্যে হাতে ধাক্কা দেই। এর ফলে মোবাইল চোখে লাগলে তিনি আঘাত পান।
স্বর্ণদ্বীপ ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোগীর চোখে খুব জোরে আঘাত করার কারণে রক্ত পড়েছে। এবং চোখ ফুলে গেছে। এটা স্বাভাবিক কোন আঘাত না।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফজলুল করিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি যত দ্রুত সম্ভব তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।
গোলাম রসুল আরো অভিযোগ করে বলেন, আমি সন্দ্বীপে বদলি হয়ে আসলেও আমাকে আমার কর্মস্থলে যোগদান করতে বাধা প্রদান করা হয়। পরে এখানকার স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতায় আমি যোগদান করি। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত স্টোরকিপার কামরুল, ক্যাশিয়ার শিরিনের স্বামী কাজী ফরিদ, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আবু সৈয়দরা আমাকে চলে যাওয়ার জন্যে হুমকি দিয়ে আসছে। তবে এ বিষয়টি তারা সবাই অস্বীকার করেন।
অভিযোগ রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ফজলুল করিম, স্টোরকিপার কামরুল, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আবু সৈয়দ, ক্যাশিয়ার শিরিন ও তার স্বামী মিলে স্বাস্থ্য বিভাগে সকল অনিয়ম করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল করিমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এ অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট। ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বিল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বির সাথে ফোনে কথা হলে তিনি দৈনিক পূর্বদেশকে জানান, এ বিষয়টি আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অবগত করেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করে সন্দ্বীপ স্বাস্থ্য খাতকে অনিয়ম-দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সন্দ্বীপের জনসাধারণ।