সন্ত্রাসীকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওপর রোহিঙ্গাদের হামলা

37

চিহ্নিত দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবু তাহেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার সময় পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে রোহিঙ্গারা। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ২০নং ক্যাম্পে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ক্যাম্প-২০ থেকে পুলিশ একজন উশৃঙ্খল রোহিঙ্গাকে ধরে নিয়ে আসার সময় পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্প-২০ অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবু তাহেরকে আটক করে নিয়ে আসার পথে ৪-৫ শতাধিক রোহিঙ্গা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় ক্যাম্পের অভ্যন্তরীণ সড়ক বন্ধ করে রাখে। পরে ক্যাম্পে নিয়োজিত বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসামিসহ পুলিশকে উদ্ধার করে। এসময় রোহিঙ্গারা দলবদ্ধভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলা করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। আটককৃত আবু তাহের মিয়ানমারের তুমরু এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ হোছন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ক্যাম্প পুলিশ একজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করার পর তার সহযোগিরা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো বলে জেনেছি। পরে অবশ্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ধৃত আসামিকে উখিয়া থানায় সোপর্দ্য করেছেন।
ক্যাম্পে হঠাৎ করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যেও এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আর এসব নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন।
রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তাফা ও মোহাম্মদ নুর জানিয়েছেন, কিছু সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুন, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সন্ত্রাসীদের হাতে উখিয়ার ২২টি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জিম্মি হয়ে আছে। সন্ত্রাসীরা দিনের বেলায় ঘুমিয়ে থাকলেও রাত হলে ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে যুবতি মেয়েদের ঘরে রাখতেও পরিবারগুলো চিহ্নিত থাকে। রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ না হলে একদিন রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের বিপক্ষে অবস্থান নেবে।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, এনজিও সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের দা, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র সরবরাহ করছে। ওই সব রোহিঙ্গারা সাধারণ রোহিঙ্গাদের মারধর করতে দ্বিধাবোধ করে না।