সত্য ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করাই কারবালার শিক্ষা

203

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল বুধবার ৪র্থ দিনে দেশি-বিদেশি আলোচক ও ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেছেন, কোনো মহৎ উদ্দেশ্য অর্জনে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। লক্ষ্যে পৌঁছুতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হয়। ৬১ হিজরিতে কারবালা ময়দানে ইয়াজিদের থাবা থেকে ইসলামের স্বকীয়তা ও মর্য়াদা রক্ষায় নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। সত্য, ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা এবং দ্বীনের সুরক্ষার জন্য হযরত ইমাম হোসইন (রা.) এর নেতৃত্বে মহাত্মা আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) সদস্যগণ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদ, চট্টগ্রামের আয়োজনে ১০ দিনব্যাপী ৩৪ তম শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মাহফিল পরিচালানা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ নূরানী আশরাফ আশরাফি আল জিলানি আস-সিমনানী। তিনি বলেন, কারবালার শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশ, সমাজ ও বিশ্বে বিরাজিত অন্যায়, মিথ্যা ও জুলুমবাজি রুখে দিতে হবে। সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রত থাকা এবং সমাজে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার প্রেরণা পাই আমরা শাহাদাতে কারবালা ট্র্যাজেডি থেকে। জমিয়তুল ফালাহর এই মাহফিল চট্টগ্রামকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহামান বলেন, যে ব্যক্তি মর্য়াদার দিক থেকে যতো বেশি উঁচু ও বড়, আল্লাহ পাক তার কাছ থেকে ততো বেশি পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। সকল নবী-রাসূল, ওলী বুজুর্গ ও সাধকদের কাছ থেকে আল্লাহ পাক সবরের পরীক্ষা নেন। ত্যাগ ও সবরের পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হন তাঁরাই মূলত আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামত ও শান মর্যাদার ভাগিদার হন। তেমনি কারবালা ময়দানে কঠিন সবরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আহলে বায়তে বাসূলের (দ.) মর্যাদা অনন্তকাল ধরে সমুন্নত রাখবেন মহান আল্লাহ পাক। সাহাবি ও আহলে বায়তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ঈমানের দাবি বিষয়ে আলোচনা করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান। শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন চন্দনাইশ জামিরজুরি রজভিয়া আজিজিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি আহমদ হোসাইন আলকাদেরী।
হযরত ইমাম হাসানের (রা.) পরিচয় ও মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেন কাটিরহাট মুফিদুল ইসলাম ফাজিল মাদরাসার প্রভাষক আল্লামা আবুল হাসান মুহাম্মদ ওমাইর রিজভি। মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন পিএইচপি পরিবারের ফাইন্যান্স এন্ড এডমিশট্রেশন ডাইরেক্টর মোহাম্মদ আলী হোসেন। ড. আল্লামা মুহাম্মদ জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে অতিথি ছিলেন শাহজাদা ডা. সৈয়দ হোসাইন সাইফ নিহাদুল ইসলাম মাইজভান্ডারী, কাঞ্চননগর রহমানিয়া দরবার শরীফের শাহজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ গোলাম মাওলা, হালিশহর রেজভীয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব আলহাজ্ব সৈয়দ মুহাম্মদ ফারুক আযম রিজভী। কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। হামদ ও নাতে রাসূল (দ) পরিবেশন করেন শায়ের মিনহাজুল আবেদীন।
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের উপস্থিত ছিলেন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি পেয়ার মোহাম্মদ, সিরাজুল মোস্তফা, মোহাম্মদ খোরশেদর রহমান, আনোয়ারুল হক, ড. জাফর উল্লাহ, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, সৈয়দ আবদুল লতিফ, আবদুল হাই মাসুম, মোহাম্মদ দিলশাদ আহমদ, এস এম শফি, সালামত উল্লাহ, সৈয়দ শিহাবুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, জাফর আহমেদ সাওদাগর, আবুল মনসুর শিকদার, মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম, মওলানা জিয়াউল হক প্রমুখ।
সালাত সালাম শেষে বিশ্বের নিপীড়িত মানবতা পরিত্রাণ, দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মুনাজাত করা হয়। মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে ঃ ংঁভরঃাড়হষরহব, িি.িংযধযধফধঃ-ব-শধৎনধষধ.পড়স। বিজ্ঞপ্তি