সচেতন না হলে ঈদযাত্রায় ঝুঁকি বেশি : কাদের

19

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন না করলে এবারের ঈদযাত্রায় অনেকের জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি হবে বলে সতর্ক করেছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সড়ক-মহাসড়কে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে করণীয় নিয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি-বিআরটিএ’র প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্যে এই সতর্কবার্তা দেন তিনি। সংসদ ভবন এলাকার বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এই সভায় যুক্ত হয়েছিলেন মন্ত্রী কাদের।তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতরে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আমাদের সংক্রমণের বিষয়ে উদ্বেগ ছিল না। কিন্তু এই ঈদে সরকার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে জনস্বার্থে গণপরিবহন চালু রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছিল পরিবহন বন্ধ রাখার। অনেকেই গণপরিবহন তথা ঈদযাত্রায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকির কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ বিআরটিএর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমরা যে যে কাজে যুক্ত থাকি না কেন সবাই এ দেশের নাগরিক। দেশের ও জনগণের কল্যাণ আমাদের চাওয়া। তাই আমি সকল অংশীজনকে ঈদযাত্রায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রোধে কাজ করার আহব্বান জানাচ্ছি’।
জনগণকে সচেতন হওয়ার আহব্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সচেতন না হলে এই ঈদযাত্রা আমাদের কারও কারও জন্য জীবনহানির মতো ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে’।
সংক্রমণ রোধে সরকার ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে’ জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘টার্মিনাল ও ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপনা আরও স্বাস্থ্যবান্ধব করা জরুরি। সকলকে মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক। সরকারির ছুটির সাথে সমন্বয় করে বিজিএমইএ এবার গার্মেন্টসমূহ ছুটি দেবে। যেদিন যে এলাকায় ছুটি হবে সে এলাকার চাপ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টরা আগেই প্রস্তুতি রাখবেন’।
পশুর হাটের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহব্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে কোরবানির পশু পরিবহন বন্ধ করতে হবে। উৎসমুখেই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিটি টার্মিনালে টাস্কফোর্স কার্যকর থাকবে। বিআরটিএর মোবাইল কোর্ট সার্বক্ষণিক কাজ করবে। অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবে। গাড়ি চালানোর পূর্বে এবং শেষে গাড়ির ভেতর-বাহির জীবুাণুমুক্ত করতে হবে। ঈদের তিন দিন আগে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে’।
দেশের যেসব সড়কে সমস্যা আছে সেগুলো ঈদের আগে মেরামত করার আহব্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের
জীবন-জীবিকার ভারসাম্য রক্ষায় সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুর অনুমতি দেওয়ার পরে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা ও ভাড়া সমন্বয় না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যে সকল পরিবহন মালিক সমিতি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যায়, জনস্বার্থ ও যাত্রীর বিরুদ্ধে যায়- তাদের বিষয়ে করণীয় নির্ধরণ করুন’।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. এসছানে এলাহি।