সঙ্গীত শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দৃষ্টিহীন শিখার

18

কাপ্তাই প্রতিনিধি

দেশের গান, আধুনিক গান কিংবা আঞ্চলিক গান যার কন্ঠে অপুর্ব ভাবে ফুটে উঠে তিনি হলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিখা তঞ্চঙ্গ্যা । কোন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া মোবাইল বা মানুষের মুখ থেকে কিংবা বেতার টিভি হতে শুনে শুনে হুবহু গান গেয়ে মানুষের প্রশংসা অর্জন করেছে ১৪ বছর বয়সী শিখা। পিতামাতা হারা শিখা তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ী কাপ্তাই উপজেলাধীন ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ভালুকিয়া গ্রামে। তার পিতা মৃত শুক্র তঞ্চঙ্গ্যা এবং মাতা মৃত শাসনপতি তঞ্চঙ্গ্যা। জন্মান্ধ শিখা জন্মের ৩ বছরের মাথায় মাতৃহারা এবং ২০২০ সালে পিতৃহারা হয়। তাই বড় বোন ও ভাইয়ের সংসারে তার বেড়ে উঠা। ইতিমধ্যে রাইখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন উৎসবে সে গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের প্রশংসায় ভাসছে। তার সুমধুর কন্ঠে গান শুনে অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে শুনে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিখাকে তার অফিসে নিয়ে আসতে বলেন। তারই প্রেক্ষিতে গত কয়দিন আগে ইউএনও অফিসে এসে শিখা বেশ কয়েকটি দেশের গান ও আধুনিক গান পরিবেশন করে উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং সুধীমহলের অকুন্ঠ ভালোবাসা পায়। এসময় তাকে নগদ ১১ হাজার টাকা পুরস্কার দেন উপস্থিত অনেকে। কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান তাকে সরকারি প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়ার ও গান শেখানোর জন্য সুব্যবস্থা করে দিবেন বলে জানান। শিখা তঞ্চঙ্গ্যা জানায়, আমার খুব ইচ্ছে বেতার ও টেলিভিশনে গান করা। আমি শুনে শুনে গান গাই। আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলে পড়তে চাই। রাইখালী প্রতিবন্ধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ বড়ুয়া জানান, শিখা তঞ্চঙ্গ্যা ভবিষ্যত স্বপ্ন ভালো গায়িকা হওয়া এবং লেখাপড়া করে শিক্ষিত হওয়া। তাকে যদি সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলে লেখা পড়া ও গান শেখানোর জন্য প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা করা হয় তাহলে তার খ্বু উপকার হবে।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, শিখা আমাদের সম্পদ। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও শিখা খুব গুছিয়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে আর দরদ কন্ঠে গান করে। ওর ইচ্ছে পূরণের জন্য কোনো পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন হলে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।