সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য

29

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আদিল বিল্লাহ চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কিছু বিষয়ে দাবি-দাওয়া দিয়েছিল সেখানে কর্মরত চায়না প্রকৌশলীদের। তাদের সাথে সুন্দর আলোচনাও হয়েছিল। এর মধ্যে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা চীনা প্রকৌশলীদের উপর হামলা করতে চেয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে। এক্ষেত্রে চীনা প্রকৌশলীদের উপর কোন হামলার ঘটনা ঘটলে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ হতো।’
পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের পর থেকে শ্রমিকরা ব্যাগ নিয়ে প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করতে থাকে। মনছুরিয়া বাজার, টাইম বাজার, চাম্বল বাজার এলাকা হয়ে শ্রমিকরা কেউ পায়ে হেঁটে আবার কেউ সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে যায়। শ্রমিকদের সবার চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। মৃত্যুপুরী থেকে মুক্ত হয়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও পথিমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়ার আতঙ্কে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখছিল শ্রমিকরা।
বিদ্যুৎ প্রকল্পের সমন্বয়ক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক আহমদ বলেন, ‘কি ঘটেছিল সেটা নিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বেতন ভাতাদি নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। শ্রমিকদের দাবি-দাওয়াগুলো তেমন সমস্যা ছিল না। স্থানীয় কিছু লোক শ্রমিকদের উস্কানি দিয়েছিল। শ্রমিকেরা যখন উত্তেজিত হয়ে প্রকল্পের জিনিসপত্রে আগুন দিচ্ছিল এবং হামলা চালাচ্ছিল তখনই পুলিশ হার্ডলাইনে যায়। কিছু করার ছিল না। আমাদেরও তো বাঁচতে হবে। এছাড়াও প্রকল্পের প্রচুর মালামাল লুট হয়েছে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
গন্ডামারার চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী পূর্বদেশকে বলেন, ‘আন্দোলন করবে বলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ পলিসি করে এলাকার কোন শ্রমিক নেয়নি। এখন বাইরের শ্রমিকের সাথে পুলিশের সমস্যা হয়েছে। আমি কখনো কোন পিয়নও দিইনি। প্রকল্পের ভেতর কি হয় আমি জানি না। প্রকল্পের ভিতরে আমার কোন নিজস্ব লোকজন নাই। এলাকায় গিয়ে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবো।’
গÐামারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম মাস্টার পূর্বদেশকে বলেন, ‘দশ ঘণ্টা ডিউটি করতো শ্রমিকরা। রমজানে দুই ঘণ্টা কমানোর কথা বলেছিল। এ বিষয়টি শুক্রবার বিকালের মধ্যে সুরাহা করার কথা থাকলেও হয়নি। যে কারণে সকালে জড়ো হয়ে দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল শ্রমিকরা। এজন্য শ্রমিক জড়ো হলে পুলিশ তাদের গুলি করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকজন মারা যায়। পরে সবাই জড়ো হয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। এসময় শ্রমিকরা গাড়িতে আগুন দেয়। তবে গাড়ি পোড়ানো নিয়ে শ্রমিক ও পুলিশ একে অপরকে দোষারোপ করছে। প্রকল্পে বাইরের শ্রমিক বেশি। স্থানীয় মানুষ আছে, কিন্তু নগণ্য। এরমধ্যে কিছু স্থানীয় মানুষ হতাহতও হয়েছে।’