ষড়যন্ত্র এখনও চলছে রুখে দাঁড়াতে হবে

32

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরাধ্য সোনার বাংলা বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই লক্ষ্য পূরণের মধ্য দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এই অর্জনের পথযাত্রাকে গতিশীল করতে আমাদের সংগঠনের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত টিআইসি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানি কারাগার থেকে লন্ডন ও দিল্লী হয়ে ঢাকায় ফেরার পর এক বিশাল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন আমার সোনার বাংলা স্বাধীন। এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে তিনি যখন উদ্যোগী হন ঠিক তখনই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে শুরু হয় ইতিহাসের উল্টোযাত্রা। দেশকে তারা নানাভাবে পিছন দিকে ঠেলে দিয়েছিল এবং যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতার অংশীদার করা হয়েছিল। তারা সামান্যতম উন্নয়নতো করেইনি বরং মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছিল। জানমালের কোন নিরাপত্তা ছিল না। এই অবস্থা থেকে উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশকে পাপমুক্ত করতে উদ্যোগী হন। ২০০১ সালে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে পরাজিত করে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে এদেশে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ-সন্ত্রাস-দুর্নীতির উদ্ভব ঘটায়। তখন থেকেই শুরু হয় শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার অপচেষ্টা। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে থেকে ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিনদফা প্রধানমন্ত্রী হয়ে জাতির হাল ধরেছেন। দায়িত্ব পালন করে দেশকে সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে সারাবিশ্বে দেশকে উন্নয়নের মডেলে পরিণত করেছেন। আজ দেশের এক কোটি পাঁচ লক্ষ মানুষ সরকারি ভাতা পায়। এই ভাতাগুলো হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি। বছরের শুরুতেই সাইত্রিশ কোটিরও বেশি পাঠ্যবই বিনামূল্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এমন নজির পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে কিনা আমাদের জানা নেই। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে ২৪ বছরের মধ্যে ১৩ বছর কারাবন্দি ছিলেন। এরপর তিনি সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বহু ত্যাগ তিতিক্ষা করেছেন। তিনি কখনো নিজের দিকে পরিবারের দিকে ফিরে তাকাতে পারেন নি। সবসময় ভাবনা ছিল বাঙালি জাতিসত্ত্বার অস্তিত্ব রক্ষা স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য। কারণ তিনি জানতেন উপমহাদেশে সভ্যতা সংস্কৃতি অর্থনীতি রাজনীতি শিক্ষা ও সমাজ প্রগতির ক্ষেত্রে বাঙালির অগ্রগণ্য ভূমিকা ছিল। কিন্তু বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র ছিলো না। তিনি একাত্তরের মার্চ মাসে উত্তাল অসহযোগ আন্দোলনে ঘোষণা করেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না আমি বাঙালির অধিকার চাই। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা নিজেরা একে অন্যের সমালোচনা করি-এটা আত্মঘাতি। আমরা কখনো বিএনপি জামাতের কান্ডকীর্তি ও দুষ্কর্মের সমালোচনা করি না। এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে আমাদের আত্ম সমালোচনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে হবে।
সভাপতির ভাষণে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা একটি ভাগ্যবান জাতি। বঙ্গবন্ধুর মত একজন মহামানব আজ থেকে শতবর্ষ আগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এখন আমাদের প্রয়োজন বঙ্গবন্ধুর আকাক্সক্ষা অনুযায়ী জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি। এজন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়নের গতিধারাকে সচল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নাই। তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা শফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য বখতেয়ার উদ্দিন খান, থানা আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিএনসি স্পেশাল, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মিথুন বড়ুয়া। সভামঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেক মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ রশিদ, উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ইসহাক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, জহুর আহমদ, জালাল উদ্দিন ইকবাল, মাহবুবুল হক মিয়া, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবু তাহের, আবদুল আহাদ, ইঞ্জি. মানস রক্ষিত, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, শহীদুল আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, নুরুল আলম, কামরুল হাসান বুলু, নুরুল আমিন শান্তি, পেয়ার মোহাম্মদ, ইঞ্জি. বিষয় কিষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মোহাব্বত আলী খান, বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের হারুনুর রশিদ, শফিকুল ইসলাম, সিদ্দিক আলম, সাহাব উদ্দীন আহমেদ, আবু তাহের, মো. ইসহাক, মো. ইলিয়াস, রেজাউল করিম কায়সার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহব্বায়ক এইচ এম জিয়াউদ্দীন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শফিউল আলম, ইউনুস কোম্পানি, সুলতান নাসির উদ্দিন, ইসকান্দর মিয়া, আবছার উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আজিম নুরু, হোসেন মুরাদ, হাসান মুরাদ, মোহাম্মদ হাসান, মোছলেম উদ্দীন, সালাউদ্দিন ইবনে আহমদ, আসিফ খান, আবু তৈয়ব সিদ্দিকী, কায়সার মানিক, ইকবাল চৌধুরী, লুৎফুল হক খুশি প্রমুখ। এছাড়া আজ শনিবার সকাল ৯টায় চট্টলশার্দূল এম এ আজিজের মৃত্যুবার্ষিকীতে হালিশহরস্থ তার কবরে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ, মাজার জিয়ারত, মোনাজাত, শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপস্থিত থাকার জন্য সকল স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন আহব্বান জানিয়েছেন। খবর বিজ্ঞপ্তির