শ্রমজীবীদের জন্য রেশন দাবি

8

 

নতুন বাজেটে পাচার হওয়া অর্থ ৭ শতাংশ কর দিয়ে দেশে ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমলাদের বেতন অনেক বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের আবার মুঠোফোনও কিনে দেওয়া হচ্ছে। অথচ শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বৈষম্য বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে চলছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এ সময় শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশন ও স্বল্প মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে কিছুটা হলেও তাদের প্রতি ন্যায়পরায়ণ আচরণ করা হতো। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গতকাল রাজধানীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত দিক হচ্ছে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া। এ প্রসঙ্গে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ আয়কর দিতে হয়। কিন্তু এবার যে সুযোগ দেওয়া হলো, তাতে অনেকেই ভাবতে পারেন, ২৫ শতাংশ আয়কর না দিয়ে সেই টাকা বিদেশে পাচার করাই বরং ভালো। তখন ৭ শতাংশ কর দিয়ে টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, সরকার ঠিক কোন ধরনের অর্থনৈতিক মডেল অনুসরণ করছে, তা বোধগম্য নয়। যারা দেশে থাকছেন, বিনিয়োগ বা কর্মসংস্থান তৈরি করছেন, তারা ২৫ শতাংশ আয়কর দিচ্ছেন। আর যারা দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে টাকা পাচার করছেন, তারা ৭ শতাংশ কর দিয়ে সেই টাকা বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে শ্রমিকদের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে বলেন, শ্রমিক-কৃষকেরা ভ্যাট দিচ্ছেন, উৎপাদন করছেন, কিন্তু তারা বাজেটে নেই। তাদের সঙ্গে প্রাক্-বাজেট আলোচনা করা হয় না। দেশের শ্রমশক্তি ছয় কোটির বেশি হলেও এ বছর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমেছে।
মজুরি বৃদ্ধি করা না গেলে অন্তত শ্রমিকদের রেশন দেওয়ার দাবি জানান রাজেকুজ্জামান রতন। এ ছাড়া তিনি খাসজমিতে শ্রমিকদের জন্য আবাসন নির্মাণের দাবি জানান। বলেন, শ্রমিকদের জন্য ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট নির্মাণে আট লাখ টাকার মতো ব্যয় হবে। শ্রমিকেরা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া দিলে ১৩ বছরে এ ব্যয় উঠে যাবে। রতনের সঙ্গে একমত পোষণ করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘মুক্তবাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়ও শ্রমিকেরা যা পান, আমাদের শ্রমিকেরা তা পাচ্ছেন না।’ শ্রমিকদের রেশন কার্ড দেওয়ার দাবির প্রতি সমর্থন জানান তিনি। তৈরি পোশাক ও ওষুধসহ বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের রেশন কার্ড দেওয়া যেতে পারে।
উপস্থাপনা করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বিজ্ঞপ্তি