শোকসভায় বক্তব্য দিতে না দেয়ায়…

27

পটিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ্যে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদের জিহŸা কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বহিস্কৃত নেতা নুরুর রশিদ চৌধুরী এজাজ। গতকাল সোমবার শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষে কাঙ্গালীভোজ চলাকালে রাত ৮ টার দিকে এজাজ সাধারণ সম্পাদককে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করে জিহŸা কেটে ফেলার এ হুমকি দেন। মূলত শোকসভায় বক্তব্য দিতে না দেয়ায় এজাজ এ হুমকি দেয়ার পর অধ্যাপক হারুনুর রশিদ উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। ঘটনাস্থলে এজাজকে লাথি ও চড় থাপ্পড় দেয়ারও অভিযোগ উঠে অধ্যাপক হারুনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হন নুরুর রশিদ চৌধুরী এজাজ। সে সময় তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামীলীগ। পরে আ’লীগ নেতা ও হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জিতেন কান্তি গুহকে কাপড় খুলে গাছে বেঁধে মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রীয় নির্দেশে গত ৩০ এপ্রিল এজাজসহ ৫ জনকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থায়ী বহিষ্কার ও দলীয় অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি ও দলীয় পদ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। বহিষ্কৃতরা আর কখনো দলীয় কোনো সভা-সমাবেশে যোগ দিতে পারবেন না এবং তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলেও নিশ্চিত করেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জমান চৌধুরী।
কিন্তু এরপর এজাজ দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পদবী ব্যবহার করে মহাসড়কের আশেপাশে ব্যানার টাঙিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তার ছবিসম্বলিত ৯০ হাজার টাকার বড় বড় ব্যানার টাঙিয়েছে এজাজ।
তবে বহিষ্কৃত এজাজের ছবিসহ কোনো ব্যানার উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে করা হয়নি এবং এজাজ নিজের প্রচার নিজে করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত শাকিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় নির্দিষ্ট নেতাদের বক্তব্য দিতে সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নৌকার বিরোধী ও স্থায়ী বহিষ্কৃত এজাজকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাতে। এ কারণে ক্ষুব্ধ হন এজাজ। অনুষ্ঠান শেষে হল টুডে কমিউনিটি সেন্টারে এজাজ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের ‘জিহŸা’ কেটে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় অধ্যাপক হারুন দল থেকে বহিষ্কৃত এজাজকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে পটিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিলনায়তনে সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গতকাল সোমবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে একাধিকবার ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধারায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।