শেয়ারবাজারে ফিরেছে আরও সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

24

 

নতুন অর্থবছরেও পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট কর কমানো হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আরও বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিনিয়োগবান্ধব পুঁজিবাজার তৈরি হচ্ছে। এরই সুফল দেখা যাচ্ছে বাজারে। সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে পতন কাটিয়ে আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে দেশের শেয়ার বাজার। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে মূল্য সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। এতে প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি বেড়ে গেছে। দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ২ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। এর ফলে টানা দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়লো ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।
অবশ্য টানা দুই সপ্তাহ বাজার মূলধন বাড়লেও তার আগের সপ্তাহে কমেছিল। তখন ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ১ হাজার ৮০৩ কোটি টাকায় নামে।
এ প্রসঙ্গ ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘বাজার সঠিক পথেই আছে। যেভাবে বাজার এগিয়ে যাচ্ছে, এভাবে এগিয়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহী হবেন’।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৪০ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ, দুই সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ১০৬ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ৮ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ২ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ১১ শতাংশ।
অপরদিকে, ইসলামি শরিয়াহ-ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও টানা দুই সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ১২ দশমিক ৯০ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ১০ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সবক’টি মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ১৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬২টির। আর ১৭ টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯০৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪৯৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা ২৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৫২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
তবে মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ ব্যাংক হলিডের কারণে গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩৮৬ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৯ টাকা। অর্থাৎ, আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে অর্ধেক। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৪টির, কমেছে ১৭১টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এতে সিএসইর প্রধান সূচক ১৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।