শেষ ওভারে তিন ছক্কার রোমাঞ্চেও জিতল না সিলেট

12

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

জিততে হলে শেষ ওভারে ৩৬ রান প্রয়োজন ছিল সিলেটের। বোলার কামরুজ্জামান রাব্বিকে প্রথম তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে রোমাঞ্চ জমিয়ে তুলেছিলেন আলাউদ্দিন বাবু। কিন্তু জয়ের জন্য শেষ তিন বলেও প্রয়োজন ছিল আরও তিনটি ছক্কা। সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি আলাউদ্দিন বাবু ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ফলে ঘরের মাঠেও পাওয়া হয়নি জয়।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ১৮২ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল খুলনা টাইগার্স। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট সানরাইজার্স। ১৫ রানের জয়ে মিনিস্টার ঢাকাকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে গেছে খুলনা।
নিজেদের ঘরের মাঠে ১৮৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে জয়ের কোনো সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারেনি সিলেট। একপ্রান্তে ঝড় তুলেছিলেন এনামুল হক বিজয়। তা ম্লান হয়ে যায় আরেক ওপেনার লেন্ডল সিমন্সের ১৭ বলে ১০ রানের টুকটুক ইনিংসের কারণে।
বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৪৭ রান। যেখানে ছিল সমান তিনটি করে চার ও ছয়ের মার। বিজয় সাজঘরে ফেরার পর হতাশ করেন মোহাম্মদ মিঠুন (২) ও নবনিযুক্ত অধিনায়ক রবি বোপারা (০)। ইনিংসের ১৩ ওভার শেষে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৮০ রান। শেষ ৭ ওভার থেকে করতে হতো ১০৩ রান। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে কলিন ইনগ্রাম ও মোসাদ্দেক সৈকত মিলে যোগ করেন ৫৮ রান, তাও মাত্র ৫ ওভারে। মূল ঝড়টা তোলেন সৈকতই। তিন নম্বরে নামা কলিন ইনগ্রাম এক চার ও দুই ছয়ে করেন ২৮ বলে ৩৭ রান। ইনগ্রাম ফিরে যাওয়ার পর অলক কাপালি আউট হন ৩ বলে ২ রান করে।
এরপর শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৩৬ রান। তখন তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন আলাউদ্দিন বাবু। কিন্তু শেষ তিন বলে আর তিন খরচ করে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া সৈকত সাতটি চারের মারে ২২ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। আলাউদ্দিন ৭ বল থেকে করেন ২৫ রান।
খুলনার পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন থিসারা পেরেরা ও সৌম্য সরকার। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ৮২ রানের ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন খুলনার বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে টসের আগমুহূর্তে অধিনায়ক বদলেছে স্বাগতিক দলটি। টস জিতে খুলনাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান নতুন অধিনায়ক রবি বোপারা। কিন্তু তার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে পারেনি বোলাররা। তিনি নিজেও অধিনায়কত্বে মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেননি।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সৌম্যর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন আন্দ্রে ফ্লেচার। পরের বলেই ¯িøপে ধরা পড়েন শেখ মেহেদি হাসান। মাত্র ১ রানেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ শুরুর আভাস দিয়েছিল সিলেট। তৃতীয় উইকেটে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন ইয়াসির আলি রাব্বি ও সৌম্য।
এ দু’জন মিলে যোগ করেন ৪৫ রান। পাওয়ার প্লে’র শেষ বলে ব্যক্তিগত ২৩ রানে অভিষিক্ত একেএস স্বাধীনের প্রথম শিকারে পরিণত হন ইয়াসির। এরপর আর উইকেটের দেখা পায়নি সিলেট। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩৬ রান যোগ করেছেন সৌম্য ও মুশফিক।
এর মাঝে ইনিংসের নবম ওভারে বল টেম্পারিং করেন সিলেট অধিনায়ক বোপারা। হাতের নখ দিয়ে বলের আকৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা করায় ম্যাচের বল পরিবর্তনসহ সিলেটকে ৫ রান পেনাল্টি করা হয়। অর্থাৎ স্কোরবোর্ডে ফ্রি ৫টি রান পায় খুলনা। তবে ফ্রি রান ছাড়াও মুশফিক-সৌম্য মিলে ঠিকই তোলেন ঝড়।
২০ ওভারের ক্রিকেটে নিজের ষষ্ঠ ফিফটিতে চারটি করে চার ও ছয়ের মারে ৬২ বলে ৮২ রান করেন সৌম্য। খুলনার অধিনায়ক মুশফিক তার ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটিতে ছয় চার ও দুই ছয়ের মারে করেন ৩৮ বলে ৬২ রান।