শেষবিদায়ে করণীয় বিষয়ে কোয়ান্টামের কর্মশালা

56

গত ২৯ শে জুন সোমবার কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম সেন্টারের ও.আর. নিজাম রোডের অফিসিয়াল কার্যালয়ে এক ব্যবহারিক প্রশিক্ষন কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এটি ছিল চট্টগ্রাম সেন্টারের ৭ম দাফন ও সৎকার প্রশিক্ষন কর্মশালা। এবারে দোয়ার মেডিটেশন দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালার বিষয় ছিল “সকল ধর্মে মৃতের গোসল-শেষবিদায়ে স্বেচ্ছা সেবকদের করণীয়”। এতে মূল প্রশিক্ষক ছিলেন আল হিদায়াহ বাংলাদেশ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মুস্তাফা মুনীরুদ্দীন। বিকাল ৩.০০ টায় করোনা শহীদদের দাফন -সৎকারসহ সব ধর্মের ধর্মীয় রীতি অনুসারে করোনা শহীদদের শেষ বিদায়ে যাবতীয় কার্যক্রমের উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেয় ৪০জন বিভিন্ন বয়সী স্বেচ্ছাসেবক নারী-পুরুষ।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দাফন ও সৎকার কার্যক্রমের মূল সম্বন্বয়কারী কামরুল হাসান সবুজের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সৎকার কার্যক্রমের আহব্বায়ক দেবাশীষ পাল দেবু, মি. জুয়েল। নারী স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্বশীল কহিনুর বেগম, সলিমা বেগম, বেবী চক্রবর্তী মহিলাদের বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষনার্থীদের মধ্যে কোয়ান্টামের দায়িত্বশীলসহ বিভিন্ন পেশাজীবি, গৃহিণী ও শিক্ষার্থী রয়েছেন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম সেন্টারের অর্গানিয়ার কো-অর্ডিনেশন এস.এম সাজ্জাদ হোসেন তার সমাপনী বক্তব্যে বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের মনোবল, করণীয় কাজ, ধৈর্য্য, মানবিক আচরণ প্রভৃতি বিষয়ে সচেতন থাকার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উল্লেখ্য, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম সেন্টার ২০১২ সাল থেকে স্বেচ্ছা লাশ দাফনের প্রশিক্ষণ ও লাশের শেষ বিদায়ে কাজ করছে। করোনাকালে শুধু চট্টগ্রামে ৯১ জন মুসলিম, সনাতন ৪১, বৌদ্ধ ০৯ ও এক ফিলিফাইন খ্রিষ্টান নাগরিকের গোসল-শেষ বিদায়ে কাজ করেছে কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা সেবকবৃন্দ।
মূল প্রশিক্ষক সৈয়দ মুস্তাফা মুনীরুদ্দীন স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণে বলেন, “জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত । আমরা জীবনকে মূল্যায়ন করতে শিখেছি বলেই মৃত্যুকে আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করার সুযোগ পেয়েছি। মৃত ব্যক্তির সবচেয়ে কাছে থাকেন পরম প্রভূ। কাজেই যারা ¯্রষ্টার সন্তুষ্টি ও সৃষ্টির সেবায় লাশের গোসল- দাফন, সৎকার, সমাধি, অন্তেষ্টিক্রিয়ায় কাজ করে তারা খুব সহজেই ¯্রষ্টার নৈকট্য লাভ করে।” প্রশিক্ষকবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ প্রতিটি ধর্মের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সাধারণ মৃতসহ করোনায় শহীদদের গোসল, শেষ-বিদায়ে সার্বিক প্রস্তুতি ও কার্যপদ্ধতির ওপর ব্যবহারিক প্রশিক্ষন প্রদান করেন। প্রশিক্ষণে করোনা শহীদদের গোসল ও সম্মানজনক শেষ বিদায়ে ইতোপূর্বে অংশ নেয়া ব্যবসায়ী এ.বি.এস. মোরশেদ ও রুবাইয়াত-ই- তামান্না অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “জীবনে যতো ভালো কাজ করার সুযোগ পেয়েছি তার মধ্যে পরম আনন্দের কাজ ছিলো করোনা শহীদদের জন্যে কাজ করতে পারা। যত দিন বেঁচে আছি নিজের কাজের পাশপাশি এই কল্যাণকর কাজে সম্পৃক্ত থাকতে চাই।”