শেখ রাসেল বেঁচে থাকবে সকল শিশুর ভাবনায় ও স্বপ্ন পূরণেফারহানা ইসলাম রুহী

3

ফারহানা ইসলাম রুহী

জ্বলজ্বলে সুতীম্ণ চোখে ছিল হাজার স্বপ্ন, অপার সম্ভাবনা।এক জ্যোতিময় নক্ষত্র ১১বছরের কিশোর শেখ রাসেল।
শরতের শিশিরের মত স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে, হারিয়ে গেলেন বেলা না হতেই। তাঁর কৌতূহলী মায়াভরা হাসি দেখলেই মনে হবে সেতো আমারই আদরের ছোট ভাই। অমিত সম্ভাবনার সেই ছেলেটি নিশ্চয়ই পিতার সংস্পর্শে এসে দেশের সেবায় প্রতিশ্রæতিশীল জনপ্রিয় ও দক্ষতার পরিচয় দিতেন। বঙ্গবন্ধুর মত তাঁকেও কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি ভাবছি বসে, আজ বেচেঁ থাকলে দেখতে কেমন হতেন ? সেই নির্মম নিষ্ঠুর বর্বর কালরাত্রির কথা মনে এলে নিজের অজান্তে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস ।
শত স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় লেখক ব্রিটিশ দার্শনিক ও বিজ্ঞানী সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিশ্বনেতা বার্টান্ড রাসেলের নামেই অভিমানী, দুরন্ত প্রাণবন্ত সর্বকনিষ্ঠ পুত্রের নাম রেখেছিলেন রাসেল।
জেলবন্দী বাবাকে কাছে না পাওয়ার অভিমানে মা কে ‘আব্বা’ বলে ডাকতেন।
কচি মনে চাইতো বড় ভাই শেখ জামালের মত আর্মি অফিসার হবেন , পরিবারের সাথে টুঙ্গিপাড়ায় বেড়াতে যেতেন ,সেখানে তার খেলার সাথীদের জন্যে খেলনার বন্দুক বানিয়ে প্যারেড করতেন। ভীষন বন্ধু বৎসল। বন্ধুদের হাওয়াই মিঠাই কিনে খাওয়াতে বিলাতে ভালবাসতেন।মানুষের জন্যে ছিল বিগলিত প্রাণ, গরিবদের জন্য ছিল তাঁর নিখাদ মমত্ববোধ।গ্রামের ছেলেদের জন্য সে জামা নিয়ে যেতেন। তাদের উপহার দিতেন। যদি বেঁচে থাকতেন নিশ্চয়ই মানব দরদি জননেতা হতেন। অবচেতন মনে অঙ্কুরিত হচ্ছিল নেতৃত্ববোধ ও সাংগঠনিক চিন্তাধারা রক্তের প্রতিটি বিন্দুতে খেলা করত সহজেই অনুমেয়।
শেখ রাসেল যখন অনেক ছোট, বড় বোন হাসু আপার(শেখ হাসিনা) বেণী নিয়ে খেলতে মজা পেতেন। বাড়ির সবার ,ভাই বোন সকলের নয়নমনি ছিলেন । সবাই তাকে চোখে চোখে রাখতেন। গায়ে এতটুকু আঁচড়ও যেন না লাগে।একটু ব্যথা পেলে সে ব্যথা যেন সবাই পেল।আদরের সীমা নেই। সে যেন সবার প্রাণ ভোমরা, প্রিয় খেলার পুতুল। মা ফজিলাতুন নেসার ছিল উদ্বিগ্ন সতর্ক দৃষ্টি। প্রাণবন্ত চঞ্চল উচ্ছল সন্তানকে চোখের আড়াল হতে দেননি।
হেমন্তের কুয়াশা মাখা প্রহরে এলো আনন্দ বার্তা। আদুরে মিষ্টি নিষ্পাপ শিশু রাসেল ১৮ অক্টোবর ১৯৬৪সালে জন্ম নিলেন। ধানমন্ডির ৩২বাড়িতে।রাত দেড়টায়। শেখ হাসিনা বলেন ,ভাই হয়েছে শুনে তারা খুশিতে আত্মহারা।
‘বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালোচুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড় সড় হয়েছিলো রাসেল।’
চারিদিকে এক অনিশ্চয়তা আর অন্ধকার।
চলছে টিকে থাকার জটিল লড়াই। তবুও সদা জাগ্রত অদম্য বাঙালির হৃদয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন।উৎকণ্ঠা ,উত্তেজনা মুখর এক কঠিন সময়। ব্যস্ত সারা পাকিস্তান। অস্থির এক পরিবেশ!
! প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোল বাজছে।
বঙ্গবন্ধু সেদিন চট্টগ্রামে ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণের জন্য।একদিকে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, অন্যদিকে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহ। হায় রে কপালের লিখন! কে জানত সেদিন?
জন্মের সময় বাবা কাছে না থাকলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পিতা-পুত্রের জীবন অবসান ঘটবে একসঙ্গেই। এই নীল বেদনার মহাকাব্য ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এক মায়াবী উড়ন্ত চঞ্চল পাখির মত ছিলেন শেখ রাসেল। সাইকেল যার ছিল খেলার নিত্য সঙ্গী। দুরন্তপনা ছিল এমনই,ব্র্রেক কষতে গিয়ে পড়ে গেলে কেউ টের পাওয়ার আগেই তিনি ফুড়–ৎ করে হাওয়া হয়ে যেতেন বিদ্যুৎ বেগে সাইকেলটা তুলে নিয়ে চোখের পলক না ফেলতেই। কবুতরকে আদর করে খাওয়ানো বেশ প্রিয় ছিল। গোয়ালের গরুর গায়ে হাত বোলাতে ভীষন ভাল লাগত তার।মাছ ধরে ছেড়ে দিতে দেয়াতে তার খুব আনন্দ।নিজের পছন্দের খাবারের সঙ্গী হত প্রিয় কুকুর টমি।বাড়ির কাজের লোকদের সাথে পিঁড়িতে বসে ,লাল ফুল আঁকা থালায় ভাত খেতে ভালোবাসতেন। উদার মহৎ প্রকৃতির শিশু ছিলেন।ফুটবল খেলতে পছন্দ করতেন । মায়া মমতা তার সহজাত প্রবৃত্তিতে ছিল। তাই আমাদের অনুভূতি ও ভালোবাসায় শেখ রাসেল সব সময় জীবিত।
একদিন কি হলো! তাঁকে একটা বড় ও বিষাক্ত কালো পিঁপড়া কামড়ে দেয়। সেই থেকে বড়-কালো পিঁপড়া দেখলেই বলতেন ‘ভুট্টো’। মুক্তিকামী বাঙালির সংগ্রামের ¯েøাগান শুনে রাসেলের মুখে ‘ভুট্টো’ উচ্চারিত হয়।আক্রমণকারী শক্তির নাম হয়ে। হৃদয়ে অঙ্কিত ছিল পাক শাসকদের প্রতি চরম ক্ষোভ আর ঘৃনা। আরেকটি ঘটনা বিস্ময়ের সূচনা করে বঙ্গবন্ধুর মনে। কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থে, ১৯৬৭ সালের ২৭ এবং ২৮ মে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন,‘আড়াই বৎসরের ছেলে আমাকে বলছে- ৬ দফা মানতে হবে- সংগ্রাম- সংগ্রাম- চলবে চলবে…।’
বঙ্গমাতা জানান ,রাস্তায় মিছিল এবং বাসায় আয়োজিত রাজনৈতিক বৈঠকগুলো থেকে- এসব কথা রাসেল শুনে নিজেই শিখেছে। রাজনীতি বোঝার বয়স হয়নি কিন্তু পিতার ছায়া ও রাজনৈতিক কর্মকাÐ প্রভাব বিস্তার করেছিল তার মাঝে। ছোট থেকেই তিনি মেধাবী আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন।
‘আমাদের ছোট্ট রাসেল সোনা’ বইটিতে শেখ বলেন রাসেলের জন্মের পর বেশির ভাগ সময় বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে থাকতে হয়। ফজিলাতুন নেসা প্রায় ১৫দিন অন্তর দেখা করতে যেতেন। ‘সে খুব কান্নাকাটি করত আসতে চাইতো না। তাকে বোঝানো হত জেল খানা আব্বার বাসা আমরা বেড়াতে এসেছি। আমরা আবার ফেরত যাবো অনেক কষ্ট বুঝিয়ে আনা হত। এই সময় এক আবেগঘন মুহূর্ত সৃষ্টি হত’।
আদর,স্নেহ পাগল শেখ রাসেলের শিশু সুলভ সরলতা আমাদের আকৃষ্ট করে। বাবার সান্নিধ্য লাভের আকুতি ব্যাকুলতা ও না পাওয়ার বেদনা ,অনুভুতি আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ ও আবেগতাড়িত করে। চোখের কোন ভিজে আসে। তাই নিয়ে বঙ্গবন্ধু ‘কারাগারের রোজনামচা’য় শেখ রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন ‘৮ ফেব্রæয়ারি ২ বছরের ছেলেটা এসে বলে, আব্বা বাড়ি চলো।’ কী উত্তর ওকে আমি দিবো। ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম, ও তো বোঝে না আমি কারাবন্দি। ওকে বললাম, ‘তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। আমি আমার বাড়ি থাকি। আবার আমাকে দেখতে এসো।’ ও কী বুঝতে চায়! কী করে নিয়ে যাবে এই ছোট্ট ছেলেটা, ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে এই পাষাণ প্রাচীর থেকে! দুঃখ আমার লেগেছে। শত হলেও আমি তো মানুষ আর ওর জন্মদাতা। অন্য ছেলেমেয়েরা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু রাসেল এখনও বুঝতে শিখেনি। তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে।
পিতা পুত্র দুজনই বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণা, হাহাকার, শূন্যতা বয়ে বেরিয়েছেন এটি প্রতীয়মান।
১৯৭২ সালে জাপানী চলচ্চিত্রকার ঘধমরংধ ঙংযরসধ নির্মিত দজধযসধহ, ঋধঃযবৎ ড়ভ ইবহমধষদ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে জাপানি সাংবাদিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় প্রশ্ন করেছিলেন-, ‘লক্ষ করছি একটি ছোট্ট ছেলে সবসময় আপনার চারপাশে ঘুরঘুর করে। ছেলেটি কে? কেন তিনি সবসময় আপনার চারপাশে থাকে?’
উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-,‘ছেলেটির বাবা সবসময়ই কারাগারে থাকতো। ফলে সে তার বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমি তার বাবা, তাই সবসময় তাকে কাছে রাখি।’
১৯৭১ শেখ রাসেলের বন্দী জীবন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন তাঁর মা ও দুই আপাসহ কি কষ্ট আর কঠিন সময় পার করেছিলেন। নেই খেলনা ! পিতা বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি এবং বড় দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল চলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধে।
শেখ হাসিনা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইটিতে লিখেছেন,‘ছোট্ট রাসেলও বন্দী জীবন যাপন শুরু করে। ঠিকমতো খাবারদাবার নেই। কোনো খেলনা নেই, বইপত্র নেই, কী কষ্টের দিন যে ওর জন্য শুরু হলো। বন্দিখানায় থাকতে আব্বার কোনো খবর আমরা জানি না। কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কিছুই জানি না। প্রথমদিকে রাসেল আব্বার জন্য খুব কান্নাকাটি করত। তার ওপর আদরের কামাল ভাইকে পাচ্ছে না, সেটাও ওর জন্য কষ্টকর।’(ইতিহাসের মহানায়ক, পৃষ্ঠা ২১)।
ছোট্ট রাসেলকে পড়ানো এত সহজ কাজ ছিল না। তিনি খুব বুদ্ধিমান ও তী² ছিলেন। প্রতিটা উত্তর সে খুব চিন্তা করে দিতেন ‘তাঁর শিক্ষিকা গীতালি দাশ গুপ্ত বলেন’ একইসঙ্গে মেধা ও মননের অপূর্ব সমাহার ছিল রাসেলের কচি মনে।” ‘আমি তাকে যা শিখিয়েছি তা সে কখনো ভুলেনি’। মহান ব্যাক্তিদের জীবনী নিয়ে জানার বেশ আগ্রহ ছিল। গৌতম বুদ্ধের জীবন কাহিনী শোনা নিয়ে বেশ মজার কাহিনী আছে। অদম্য কৌতূহল ছিল শেখ রাসেলের। শিক্ষিকার কাছে জেনে আরো বেশি জানার জন্যে সারা রাত বাবাকে ঘুমাতেই দেননি। পরের দিন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক কে বললেন ‘মাস্টর, এত বড় সর্বনাশ করলি।’ শিক্ষক খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েন! তিনি কোনো ভুল শিক্ষা দিয়েছেন কিনা ! বঙ্গবন্ধু তাকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন, ‘তুই গৌতম বুদ্ধের জীবন কাহিনী রাসেলকে বলেছিস? ও গত রাতে একটা পর্যন্ত জেগেছিল। আমি কাজ শেষে ঘুমাতে গেলে বুদ্ধদেব সম্পর্কে আরও জানতে চায়’।
দেশি বিদেশি চক্রান্তের বলি শেখ রাসেল। একটি অসহায় নিরপরাধ শিশু এক নির্মম ভয়ানক লোমহর্ষক রাজনৈতিক হত্যাকাÐের শিকার। কেমন পাষাণ ? ফুটফুটে সুন্দর শিশুর বুকে গুলি চালালো ? তখন তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচার রক্তমাখা নিরব, নিথর লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার পর সবশেষে নিষ্ঠুরভাবে বুলেটের আঘাতে হত্যা হলেও পাষÐ দানবেরা মানসিকভাবে প্রথমেই হত্যা করেছে। আতঙ্কিত হয়ে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, ‘মায়ের কাছে যাব’ মায়ের কাছে নেওয়ার নাম করেই হত্যা করা হয় এগারো বছরের শিশু রাসেলকে। তৃষ্ণার্ত হয়ে পানি খেতেও চেয়েছিলেন। বর্বর খুনিরা জঘন্য কর্মকাÐের দৃশ্যগুলো দেখিয়ে তাকে ভীতি সঞ্চয় ও খুন ক্ষমার অযোগ্য। মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রæসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করেছিলেন ‘আমাকে হাসু আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দিন’ বলে। বাঁচতে চেয়েছিলেন শেখ রাসেল। এমন নৃশংস পৈশাচিক হত্যাকাÐ কোথাও নজির নেই। ক্ষমতার লালসায় বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি নিশ্চিহ্ন করাই শিশু রাসেলকে হত্যার মূল কারণ ও ট্র্যাজেডির শিকার। চিরদিনের জন্য নিরব-নিস্তব্ধ হয়ে যায় একটা স্বপ্ন, সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখা প্রাণখোলা প্রাণোচ্ছল শিশুটি।
ক্ষনজন্মা শেখ রাসেলের জীবনের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিমালা বেশ ঐশ্বর্যমÐিত ও বর্ণাঢ্য। পিতার সাথে বিশ্ব নেতাদের সাক্ষাৎ, দেশের বরেণ্য বিশিষ্ট মানুষের সান্নিধ্য লাভ, পরিবারের মধুর ভালোবাসা,
।স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন,ছয় দফা ঊনসত্তরের গণআন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি গঠনের প্রচেষ্টা এই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায়গুলো দেখা ও অনুভব করার সুযোগ,গ্রামের পরিবেশ, সবুজ প্রকৃতি ও রাজধানীর শহুরে জীবনযাপন বেড়ে ওঠা মাঝে চমৎকার মেলবন্ধন ঘটেছে। যাঁর মাঝে যে কেউ সহজ সরল বাঙালি আবহে চিরচেনা শৈশব বেলাকে খুঁজে পাবে। এছাড়াও তার স্বল্পায়ু জীবনকে আরো সমৃদ্ধ করেছে তিক্ত, কঠিন, রুঢ় বাস্তবতা ।মুক্তিযুদ্ধের সময় বন্দী জীবন ও কারাগারে অবস্থানরত এক রাজবন্দীর পরিবারের দুঃখ বেদনাকে উপলব্ধি।
দেশপ্রেমে উজ্জীবিত মানুষ হিসাবে বেড়ে উঠার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। যদি বেঁচে থাকতেন একজন আলোকিত আদর্শ বিশ্ব নেতা হয়ে দেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করতেন।নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন প্রজন্মকে পথ নির্দেশনা দিতে পারতেন।শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে ১৮ অক্টোবর ‘জাতীয় দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।
শেখ রাসেলকে নিয়ে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, “আমি তাকে স্বাধীনতার স্বপ্নের প্রতীকী শিশু হিসেবে দেখি। শৈশব থেকে তার দেশপ্রেম ছিল তা পরিবার ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত।
নরঘাতকরা শিশু রাসেলের আশা ও রঙিন স্বপ্নকে পূর্ণতার সুযোগ দেয়নি।এই ধরিত্রীর শিশুরা নিপীড়ন, অবিচার ,বর্বরতা হতে নিরাপদ থাকুক। শেখ রাসেল বেঁচে থাকবে সকল শিশুদের ভাবনায়, সৃজনশীলতায় ও স্বপ্নপূরণের মাধ্যমে ।

লেখক : প্রাবন্ধিক, শিক্ষক,সংগঠক