শেখ কামালের নীতি ও আদর্শ যুবসমাজের জন্য অনুসরণীয়

16

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, শেখ কামালের নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করে আমাদের যুবসমাজ নিজেদেরকে গড়ে তুলবে এবং শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরো সমুন্নত করবে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল আমাদের জন্য যে নীতি আদর্শ, কর্মপন্থা ও দিক নির্দেশনা রেখে গেছেন তা থেকে আমাদের যুবসমাজ তাদের চলার পথে তার আদর্শকে সামনে রেখে, তা অনুসরণ করে নিজেদেরকে গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন। খবর বাসসের
তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু দেশে নয় বিশ্ব তথা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যেন আমাদের মেধা ও মননকে বিকশিত করে বাংলাদেশের মর্যাদাটাকে আরো উন্নত করতে পারি, সেভাবেই আমাদের ছেলে-মেয়েরা কাজ করবে সেটাই আমি চাই। তিনি বলেন, আজকে কামাল আমাদের মাঝে নেই, আধুনিক ফুটবল খেলা এবং আবাহনী ক্রীড়া চক্র গড়ে তোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলাধুলায় ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভূক্ত করার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে কামাল। পাশাপাশি সংগীত চর্চায় স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করে বিভিন্ন দেশিয় গানকে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রে তুলে তাকে জনপ্রিয় করার কাজটিও সে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে গেছে। কেননা বহুমুখী প্রতিভা নিয়েই জন্মেছিলেন শেখ কামাল।
প্রধানমন্ত্রী স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, বাসার ছাদে তার সঙ্গীত দলের এই অনুশীলন চলতো যেখানে ফিরোজ সাঁই, ফেরদৌস ওয়াহিদ, নাসিরউদ্দিন সহ অনেকেই আসতো। জাতির পিতা হত্যার ৬ বছর পর দেশের ফিরতে সক্ষম হয়ে ধানমন্ডী ৩২ নম্বরের জাতির পিতার বাড়িটিকে তিনি মিউজিয়াম করলে সেখানে ফিরোজ সাঁই কামালের অর্গান, যেটি দিয়ে তিনি গান তুলতেন সেটি দিয়ে যায়। তার সেই অর্গান এবং কামালের ‘সেতার’টি তিনি সেখানেই রেখে দিয়েছেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ কামাল সেনাবাহিনীতে কমিশন পেলেও যেহেতু ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সম্মান শ্রেণীর লেখাপড়া তখনো শেষ হয়নি তাই মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণের জন্য সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে আবারো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে সে ভর্তি হয়। কিন্তু মাস্টার্সের রেজাল্ট প্রকাশিত হবার আগেই না ফেরার দেশে চলে যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার প্রবর্তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ কামালের অবদান সকলের মনে থাকবে। তিনি আরো বলেন, সাথে সাথে এটা আমি চাই আমাদের দেশের যুব সমাজ খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও সমাজসেবা সহ সবদিকে আরো উদ্যোগী হবে এবং নিজেদেরকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করবে সেটাই আমার আকাঙ্খা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য তার দল যখনই সরকারে এসেছে তখনই দেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক জগতের উন্নতির প্রচেষ্ট চালিয়েছে। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের দুঃস্থদের সেবায় শেখ কামাল যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেই পদাংক অনুসরণ করেই তার সরকার সিড মানি দিয়ে বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে দিয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ এবং স্পন্দন শিল্প গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাজী হাবলু স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত ‘এক আলোর পথের যাত্রী’ শীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী পরে শেখ কামালকে নিয়ে রচিত ’বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল আলোকিত তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক সচিত্র স্মারক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।