শীতে খান মুলা

8

হাসিনা আকতার লিপি

মুলা কেবল ভারতবর্ষের লোকজনের কাছেই নয়, বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। এটি জাপানিদের অন্যতম পছন্দের একটি সবজি। মুলা সালাদ, তরকারী ও ভাজি হিসেবে খাওয়া যায়। আবার মুলার পাতা শাক হিসেবেও জনপ্রিয়। মুলার শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি। আর মুলার আছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। মুলার ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া অন্যান্য খনিজ উপাদান শরীরকে সুরক্ষা দেয়। আসুন একনজরে মূলার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা দেখে নেওয়া যাক।
পুষ্টিগুণ : ১০০ গ্রাম মুলায় আছে ২৮ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, এক দশমিক ছয় গ্রাম খাদ্য আঁশ, ২৫ মাইক্রোগ্রাম ফলেট, ৩৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ২৩৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, শূন্য দশমিক ২৮ মিলিগ্রাম জিঙ্ক এবং ১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম।
উপকারিতা : মুলায় রয়েছে ক্যারটিনয়েডস, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। পাশাপাশি মুকগহŸর পাকস্থলী, বৃহদন্ত্র, কিডনি এবং কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। মুলায় থাকা ফাইটোস্টেরলস হৃৎপিÐ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি রক্ত পরিষ্কার করে। সেই সঙ্গে লিভার এবং পাকস্থলীর সমস্ত বর্জ্য দূর করে। মূলা কিডনি রোগসহ মূত্রনালির রোগে উপকারী। মূলার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে কফ, মাথাব্যাথা, হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জ্বরের কারণে শরীর ফুলে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে এটঁ। ত্বক পরিচর্যায়ও মূলা ব্যবহৃত হয়। কারণ এটি অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা মুলার পাতলা টুকরা ত্বকে লাগিয়ে রাখলে ব্রণ নিরাময় হয়। এ ছাড়া কাঁচা মূলা ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বলে ফেসপ্যাকেও ব্যবহার হয়। মূলা রক্তের দূষণ পরিষ্কার করে লিভার সুস্থ রাখে। ফলে জন্ডিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। এ ছাড়া এটি রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ কমিয়ে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় নিয়ে আসে। পাশাপাশি এটি রক্তকনিকায় অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। ফলে জন্ডিস রোগে শরীরের রক্তকণিকা কম ভাঙে। এ ছাড়া মূলা খিদে কমায়। ফলে এটি খেলে ওজনও কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি শ্বেতরোগের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর। মুলায় বীজ আদার রস এবং ভিনেগার ভিজিয়ে লাগালে শ্বেতরোগ কমে। মৌমাছির হুল অথবা যেকোনো পোকা কামড় দিলে মুলার রস লাগিয়ে দিতে হবে। এতে সঙ্গে সঙ্গে ফোলা ও ব্যাথা অনেকটা কমে যাবে।
সতর্কতা : যাদের থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা ও বুক জ্বালা- পোড়ার সমস্যা আছে তাদের মূলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

লেখক : ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট ও কনসালটেন্ট
ল্যাব এইড লিমিটেড এবং পার্ক ভিউ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক লিমিটেড। চট্টগ্রাম।