শীতার্তদের পাশে দাঁড়ান

14

সারাদেশে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত নয় শুধু দিনের বেলায়ও একটানা কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের অনেক এলাকায়। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে সূর্যের আলো। দিনে রাতে ঝরছে কুয়াশা বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর পরই হাটবাজার সড়ক-মহাসড়ক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে মানুষ। যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। মৌলভীবাজারে শীত জেঁকে বসেছে। তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গা উপজেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ও রাতে শীতের তীব্রতা বেশি থাকলেও দিনে রোদ থাকায় কিছুটা গরম অনুভূত হচ্ছে তবে বিকাল ও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে যাচ্ছে। বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
বাংলাদেশের ষড়ঋতুর মধ্যে শীত পঞ্চম ঋতু। প্রত্যেক ঋতু তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। পৌষ এবং মাঘ মাসের প্রতিটি সকালে প্রচন্ড শীতের প্রভাব থাকে। পৌষের শীতের প্রকোপের প্রভাবটা উত্তরবঙ্গে জেঁকে বসেছে। কথায় আছে, মাঘ মাসের শীতে নাকি বাঘ কাঁপে। কিন্তু এবার পৌষের শুরুতেই বাঘ কাঁপতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে জেঁকে বসেছে শীত। তীব্র শীতের প্রকোপে কাবু দেশের বর্তমান উত্তরাঞ্চল। এ অঞ্চলের মানুষের শীতে নিদারুণ কষ্টটা পেতে শুরু করে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের দিক থেকে ফেব্রæয়ারির শেষ অবধি। এই সময়ের মধ্যে কয়েকবার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। যখন শৈত্যপ্রবাহ চলে, তখন জনজীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ, বিশেষভাবে কষ্ট পায় শিশু ও বয়বৃদ্ধরা। এ সময় খোলা আকাশের নিচে কাজ করা শ্রমজীবীরা পড়ে যায় বিপাকে। এখন এই মাঘের মাঝামাঝি সময়ে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় চলছে শৈত্যপ্রবাহ।
কুয়াশায় মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামের আকাশ ঝাপসা ছিল। তাই নিরাপত্তার কারণে বিমানবন্দরে ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণ বন্ধ ছিল। ৪টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণে ব্যর্থ হয়ে পার্শ্ববর্তী বিমানবন্দরে নেমেছে। বিমানবন্দর জানায়, কুয়াশার কারণে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ মিলে ঢাকা থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ফ্লাইট সঠিক সময়ে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারেনি। রানওয়ে খোলার পর পর ফ্লাইট অবতরণের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়ায় রানওয়েতে উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষাকৃত ফ্লাইটগুলোর জট দেখা যায়। ঘন কুয়াশার কারণে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনই এ সময় পুরাতন কাপড় সংগ্রহ করে শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করে। দেশের ধনী সম্প্রদায় এই মানবিক কর্মে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন, দিতে পারেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে। সরকারের দায়িত্ব সাধারন মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে। কম্বল সহ গরম কাপড় বিতরণের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি দেশের বিত্তবানদের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।