শিল্পকারখানা খুলে দিতে অনুরোধ ব্যবসায়ীদের

12

মহামারি নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে পোশাক শিল্পসহ সব ধরনের কারখানা খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন শিল্পমালিকরা। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ, ঢাকা চেম্বার ও এফবিসিসিআইয়ের নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানান। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজার হারানোর শঙ্কা, সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়া, বন্দরে জট, সার্বিক অর্থনীতিসহ সবকিছু বিবেচনা নিয়েই তারা এ অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়েছেন।
বৈঠকে শেষে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, যে লকডাউনটা আছে, এটা থেকে যেন সমস্ত ধরনের শিল্পকে বাদ দিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়, এটাই অনুরোধ করতে এসেছিলাম। খবর বিডিনিউজের।
গত এপ্রিলে এবং জুলাই মাসের শুরুতে যখন লকডাউন জারি হয়েছিল, তখন শিল্প কারখানা চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হলেও ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে কারখানাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
তবে শিল্প খাতের মধ্যে কোরবানির পশুর চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খাদ্যপণ্য এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে পণ্য ও ওষুধ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রয়েছে।
ভরা মৌসুমে রপ্তানি পণ্য যথাসময়ে পাঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা তাদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ শিথিলের আহব্বান জানিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার এক সভার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, চলমান লকডাউন চলবেই। শিল্পপতিরা যে অনুরোধ করেছেন, তা গ্রহণ করতে পারছি না।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা আমাদের কনসার্নটা বলেছি, ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকলে কী প্রবলেম হচ্ছে সেটা। কারণ সাপ্লাই চেইনটা ভেঙে যাচ্ছে। পোর্টে জটের কথা আপনার সবাই জানেন। আন্তর্জাতিক বাজার হারানোর শঙ্কা আছে আমাদের। লাস্ট, আমাদের লোকাল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতেও সাপ্লাই চেইনে প্রবলেম হচ্ছে।
সরকারের তরফ থেকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে এই অনুরোধটা আমরা করেছি। তিনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কথা বলে খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্তটা দেবেন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, সংক্রমণ, মৃত্যু সবকিছু মাথায় নিয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকার এটা বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি। পোশাক শিল্প শুধু না, সমস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান পক্ষে আমরা এসেছি। সমস্ত শিল্পের সঙ্গে অনেক কিছু ইনভলভড। সে কারণে আমরা এটা আবারও অনুরোধ করেছি। যেন এটাকে লকডাউনের বাইরে রাখা হয়, যেন বিষয়টা বিবেচনা করা হয়।
খাদ্য, চামড়া, ওষুধ শিল্পকে খুলে দেওয়া হলেও সেখানেও ‘সাপ্লাই চেইনের সঙ্কট’ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, “ফুড ইন্ডাস্ট্রির র‌্যাপিংয়ের দরকার। কার্টনের দরকার। এমন অবস্থায় ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ রাখা যায় না।
কোনা নির্ধারিত দিন থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে কিনা- এই প্রশ্নে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, কোনো নির্দিষ্ট দিন নয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। যেহেতু ২৩ তারিখ থেকে লকডাউনে সব কিছু বন্ধ আছে, ঈদের আগে অলমোস্ট ১৮-১৯ তারিখ থেকে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে, সবকিছু অনেকদিন বন্ধ থাকার কারণে সবকিছুরই সাপ্লাই চেইনে একটা শর্টেজ হয়।
আমাদের এক্সপোর্ট যেটা আছে, তার সঙ্গে সঙ্গে লোকাল এবং পোর্টেও অনেক ইমপোর্টেড মাল আসে। জাহাজগুলো আনলোড করা… মালগুলো পোর্টে রাখার জায়গা থাকছে না। সে কারণে যদি ফ্যাক্টরিগুলো, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো না খোলে, পোর্ট থেকে কন্টেইনারে মাল রিলিজ না করলে একটা জটিলতার দিকে চলে যাচ্ছে।
শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য কারখানা খুলে দেওয়া দরকার মন্তব্য করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শ্রমিকরা গ্রামে থাকলে সেখানে ডাক্তার বা ওষুধের দোকান বা হসপিটাল নাই। কিন্তু যে ফ্যাক্টরিগুলো আছে, যার আশেপাশে তারা থাকে, সেখানে যদি থাকে, তাহলে শ্রমিকদের আমরা নিরাপত্তা দিতে পারি।
বিকেএমইএর সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কেন শিল্প কলকারাখান খুলে দেওয়া উচিত সেটা বোঝানোর জন্য আজকের (বৃহস্পতিবার) মিটিংটি হয়েছে। কারখানা ও রপ্তানিমুখী উৎপাদন বন্ধ থাকার ফলে প্রত্যক্ষ ক্ষতিগুলো তুলে ধরতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে মালিক-শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতারা একমত যে, কারখানা বন্ধ করার ফলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করবেন বলেছেন।

 

খুরুশকুলে তরুণকে
ছুরিকাঘাতে হত্যার
অভিযোগ

কক্সবাজারের খুরুশকুলে নুরুল হক লালু (১৯) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৮ জুলাই) রাত ১২টার দিকে খুরুশকুল ইউনিয়নের পেঁচার ঘোনা হাম্বার গোরায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল হক লালু ওই এলাকার মধ্যম ডেইল পাড়ার মনিরুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় এক সিএনজিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
নিহতের ফুফা সাহেদ খান অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে নুরুল হক লালুকে পেঁচার ঘোনা হাম্বার গোরা টমটম গ্যারেজ থেকে সিএনজি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার মুখ বেঁধে খালি মাঠে নিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হত্যাকারী এখনও চিহ্নিত হয়নি। এ ঘটনায় এক সিএনজিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
তবে এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও রিসিভ করেননি।