শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানে

36

পূর্বদেশ ডেস্ক

চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সন্তানকে চিকিৎসক বানাতে অনেক মা-বাবারও স্বপ্ন থাকে। এজন্য দরকার কঠোর অধ্যবসায়। এসএসসি-এইচএসসিতে ভালো ফলাফলই দিতে পারে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে পড়ার সুযোগ। মানুষের শরীর নিয়ে জানার আগ্রহ থেকেই পড়া উচিৎ চিকিৎসা বিজ্ঞান।
সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা ১ এপ্রিল এবং ডেন্টাল কোর্সের পরীক্ষা আগামী ২২ এপ্রিল আয়োজন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর।
৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, সামরিক বাহিনী পরিচালিত ৬টি ও ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ২১টি ডেন্টাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন দেশসেরা মেধাবীরা। এমবিবিএস ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন। লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০ নম্বর পেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়। সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য সরকারের ব্যয় হয় ১৫ লাখ টাকার মতো। আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পাঁচ বছরের এমবিবিএস ডিগ্রি নিতে একজন শিক্ষার্থীর ব্যয় হয় ২৫-৩০ লাখ টাকা।
সরকারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে যারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের জন্য আছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল স্বীকৃত এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত বেসরকারি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ, ইউএসটিসি, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ ও মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ। এই ৬টি প্রতিষ্ঠান এখন চিকিৎসা শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কোনো কোনো কলেজে চালু করা হয়েছে বিনামূল্যে মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি, কোথাও আবার কম টাকায় ভর্তির সুযোগও। এসব প্রতিষ্ঠানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করছেন। চন্দনাইশে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ১০০টি। যার মধ্যে ৪৫ শতাংশ আসন বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ। রয়েছে শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা। কলেজ কর্তৃপক্ষ চন্দনাইশে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য মাদার থেরেসা গার্লস হোস্টেল প্রতিষ্ঠা করেছে। স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে রাখা হয়েছে নিজস্ব ক্যান্টিনও। রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, দরিদ্র ও মেধাবী কোটা। সর্বশেষ ভর্তি ফি ছিল ১৭ লাখ টাকা।
নগরের চান্দগাঁও শমসের পাড়ায় চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা ৬০টি। ডিপ্লোমা কোর্সে আসন সংখ্যা ৬০টি। বিএসসি নার্সিং কোর্সে আসন সংখ্যা ৫০ ও পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং কোর্সে আসন সংখ্যা ৪০টি। এখানে ২০০৭ সাল থেকে একই ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ রয়েছে, যা চট্টগ্রাম বিভাগে একমাত্র ডেন্টাল কলেজ। ডেন্টাল কলেজের বর্তমান আসন সংখ্যা ৬৫টি। জানা গেছে, এমবিবিএস শ্রেণিতে শিক্ষার্থীপ্রতি ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৮ লাখ টাকা। ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) এর চিকিৎসা অনুষদ ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড হেলথ সায়েন্স-আইএএইচএস’র অধীনে প্রতি ব্যাচে ৭৫ জন দেশি ও ২৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির নিয়ম রয়েছে। গত বছর এই প্রতিষ্ঠানে দেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৮ লাখ টাকা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ হাজার ইউএস ডলার। আগ্রাবাদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজে ১১০ জন ভর্তি করা হয়। এখানে ১৫টি আসনে ভর্তির জন্য মেধাবী ও অসচ্ছল, কলেজের গভর্নিং বডি এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা রয়েছে। ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকার সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজে ৬৫ জন গরীব ও মেধাবী ৫ জন ও ২ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের জন্য কোটা সংরক্ষিত আছে। এই প্রতিষ্ঠানে গত বছর ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৬ লাখ টাকা। বায়েজিদ বোস্তামি চন্দ্রনগর এলাকার মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজে প্রতি ব্যাচে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এখানে ভর্তি ফি নেওয়া হয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৩৯ হাজার ইউএস ডলার, দেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ১৩ লাখ টাকা।
ক্যাম্পাসের উন্নয়ন, টিউশন, অধিভুক্তি ফি, বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন, মার্কশিট যাচাই, কেন্দ্র ফি, কলেজ ম্যাগাজিন ফি, গেমস, স্পোর্টস ও অন্যান্য বিনোদন ফি, পরিচয়পত্র, লাইব্রেরি ফি, সেশন ফি, জেনারেল ল্যাব ফি, কম্পিউটার ল্যাব, আবাসিক সুবিধা, থাকা-খাওয়া বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব টাকা আদায় করা হয়।