শিক্ষক যখন ‘নরসুন্দর’

34

এবার লক্ষীপুরের রায়পুরে ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মঞ্জুরুল কবির নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার (৬ অক্টোবর) উপজেলার বামনী ইউনিয়নের হামছাদী কাজির দিঘিরপাড় আলিম মাদ্রাসায় ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত মঞ্জুরুল কবির ওই মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও জামায়াতে ইসলামের ইউনিয়ন আমির। ভুক্তভোগীরা একই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র।
এদিকে, এই ঘটনার একটি ভিডিও শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এরপরই সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই শিক্ষক।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বী জানান, বুধবার তাদের ইংরেজির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ক্লাসে ঢুকে কাঁচি দিয়ে ছয় ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন। ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরে অন্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা ক্লাসে ফেরে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক ছাত্র বলেন, ‘মঞ্জুরুল স্যার আমাদের ক শাখার ছয় জনের চুল কেটে দিয়েছেন। কিন্তু খ শাখার কারও চুল কাটেননি। আমি মাথা ন্যাড়া করার কারণে চার দিন মাদ্রাসায় যাইনি। পরে স্যার দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি দাখিল শ্রেণির সব ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। তারা আমার কথা না শোনায় কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি। কোনও ছাত্রকে হুমকি দেওয়া হয়নি।’
বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সি বলেন, ‘শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের আমির। তিনি প্রায়ই ছাত্রদের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। তার ভয়ে ছাত্র তো দূরের কথা, অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায়।’
রায়পুরের ইউএনও সাবরীন চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিধিমোতাবেক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিয়েছিলেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনাটি নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।