শিক্ষকদের আলাদা বেতন স্কেল শুধুই প্রতিশ্রুতি

13

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন স্কেল চালু করার ঘোষণা দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা কার্যকর হয়নি। টানা ১৪ বছর ধরে তা শুধু প্রতিশ্রুতিতেই আটকে আছে। দেখা গেছে, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বেতন বৈষম্য তীব্র। বৈষম্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও। অথচ একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি শিক্ষকরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে নিয়োগ পাচ্ছেন। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষকরাও কেন্দ্রীয়ভাবে ‘জাতীয় শিক্ষা নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ’ (এনটিআরসিএ)-এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পাচ্ছেন। একই সিলেবাস ও কারিকুলামে তাঁরা পাঠদান করলেও বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। অথচ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ৯৮ শতাংশই বেসরকারি খাতের। শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সংখ্যাতেও তাঁরা বেশি।
সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা পান তাঁরা। স্কেলভিত্তিক পূর্ণ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা হিসেবে ১৫০০ টাকা, বার্ষিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধিও পান। এর বাইরে উৎসব বোনাস স্কেলভিত্তিক দেওয়া হয়। পরবর্তী স্কেল নির্ধারণকৃত ও চলমান। ধারাবাহিক প্রমোশন ও বদলির ব্যবস্থা চালু আছে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩৫,৫০০ টাকা (৬ষ্ঠ গ্রেড)। অথচ বেসরকারি প্রধান শিক্ষকরা ২৯ হাজার স্কেলে (৭ম গ্রেড) বেতন পান। সরকারি শিক্ষকদের বিভাগীয় ভাতার ব্যবস্থা আছে। অবসরের পর পরিপূর্ণ অবসর ভাতাসহ মাসিক পেনশন আছে। সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য স্বল্প ও নির্ধারিত ব্যয় করতে হয়। তাঁদের সন্তানরা সরকার থেকে শিক্ষা ভাতা পায়। সবচেয়ে বড় পার্থক্য পদমর্যাদায়। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তার পদমর্যাদা ভোগ করেন। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো পদমর্যাদাই নির্ধারণ করা নেই।