শারদীয় দুর্গাপূজা আজ শুরু

11

পূর্বদেশ ডেস্ক

পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা আজ সোমবার সন্ধ্যায় ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। এদিন বিভিন্ন মÐপে হবে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালির এই শারদোৎসবের।
হিন্দু স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে এখন সর্বত্র উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে পূজামন্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ঘোড়া এমন একটি বাহন যা যুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঘোড়ার পায়ের শব্দও যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। তাই পঞ্জিকা মতেই ঘোটকে আগমন মানেই ছত্রভঙ্গের কথাই বলা হয়। অর্থাৎ এই সময়ে দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকে। পঞ্জিকা বলছে, মা দুর্গার এবার দোলায় গমন। দোলায় গমনের ফলাফল-মড়ক লাগা। ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর মহাষ্টমী, ১৪ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এবার চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন ১৫ উপজেলায় সর্বজনীন ১ হাজার ৫৫৩টি এবং পারিবারিক ৪১১টি মন্ডপ সহ মোট ১ হাজার ৯৬৪টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত। আর চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান পূজামন্ডপ জেএম সেন হল প্রাঙ্গণসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৭৬টি পূজামÐপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।
রাষ্ট্রপতির বাণী: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এক বাণীতে তিনি করোনার এ সময়ে পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ সমভাবে উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে পালন করি। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।
পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজা বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবস্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এজন্যই হিন্দুমতে অকাল বোধনও বলা হয়।
এদিকে প্রতিটি পূজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও বিডিআর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।