শামীম ওসমান বিধি ভেঙেছেন, তবে ‘শাস্তিযোগ্য নয়’

10

 

পূর্বদেশ ডেস্ক

নির্বাচনে সহিসংতায় মৃত্যুর দায় কমিশনের নয় উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, প্রার্থীদের সহনশীলতা ছাড়া নির্বাচনে সহিংসতা বন্ধ সম্ভব না। গতকাল বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের মরগ্যান স্কুলে প্রিজাইডিং অফিসারদের সাথে মতবিনিময় ও দিকনির্দেশনামূলক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় কে এম নুরুল হুদা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে সহিংসতার কোনো শঙ্কা দেখছেন না। কোনো প্রার্থীর সহিংস মনোভাব নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ভাল রয়েছে, কোনো সহিংসতার সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও জানান, এমনকি এখনো ভোট স্থগিতের পর্যায়ে যায়নি করোনা সংক্রমণ। ইভিএম একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি যার মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সিটি করপোরেশন হওয়ার পর আগামী রোববার তৃতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসী। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী, যিনি গত দশ বছর ধরে ওই দায়িত্ব সামলে আসছেন।
তার সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন তৈমুর আলম খন্দকার; বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। সেজন্য তাকে দলীয় পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে ভোট হলে বরাবরই আলোচনায় থাকেন প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্য শামীম ওসমান। গত ১০ জানুয়ারি তিনি সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় প্রতীক ‘নৌকার পক্ষে নামার’ ঘোষণা দেন। তার ওই ঘোষণা নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আইভীও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, একজন সংসদ সদস্য হয়ে শামীম ‘মাঠে নামলে’ তাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে।
শামীম ওসমানের সংবাদ সম্মেলনে ‘আচরণবিধি ভঙ্গ’ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, সাংসদরা প্রচারে অংশ নিতে পারবে না। প্রচারে নামলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। শামীম ওসমানের সংবাদ সম্মেলনটি আচরণবিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে। তবে তা ‘শাস্তি দেওয়ার মত নয়’।
সিইসি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ভোটের পরিবেশে নিয়ে তিনি শঙ্কার কিছু দেখছেন না। আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের মানুষ ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই’ ভোট দিতে পারবে বলে তার বিশ্বাস। যারা রাজনীতি করেন, তারা তাদের মত করে অনেক কথা বলতে পারেন, আমরা আমাদের মত করে কাজ করি। এতে যদি তাদের কোনো সুবিধা হয়, হতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো রকমের শৈথিল্য নেই।
গত ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, গত নির্বাচনে লোক মারা গেছে, সেটা কীভাবে, আমি সেটা আপনাদের বলার চেষ্টা করেছি। কীভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর সেই দায়বদ্ধতা আসে- সেটা আমার হিসাব মেলে না।
নির্বাচন হয়ে গেলে ভোটাররা যখন বাড়ি চলে যায়, নির্বাচনী মালামাল নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়ার পথে শত শত লোক এসে তাদেরকে ঘেরাও করে। তাদের আক্রমণ করে ব্যালট বাক্স নিয়ে যায়-এই জাতীয় ঘটনা ঘটে।
সিইসি বলেন, ওই সময় নির্বাচন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে যারা থাকেন, তারা অনেক চেষ্টা করেন। তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য রক্তাক্ত হন, নিহতও হন।
এ ব্যাপারটি প্রার্থী ও সমর্থকদের সহনশীলতা এবং নির্বাচনকালীন আচরণবিধি মেনে চলা ছাড়া অন্য উপায়ে দূর করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন নুরুল হুদা।