শহরের শিশুরা খায় না পর্যাপ্ত শাকসবজি

23

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিসজনিত অসংক্রামক রোগ। এ সকল রোগ প্রতিরোধ না করা হলে, দেশের সার্বিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য সেক্টরের বাইরে যারা আছেন তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স, সিটিজেন নেটওয়ার্ক আয়োজিত ওয়েবিনারে এই অভিমত ব্যক্ত করা হয়। সভায় ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুকের সঞ্চালনায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর অধ্যাপক আ ফ ম সারোয়ার।
প্রফেসর সরোয়ার মূল প্রবন্ধে বলেন, শরীরচর্চার খেলার মাঠ এবং উম্মুক্ত স্থান নিশ্চিতে দেশে প্রায় ১৬টি মতো আইন রয়েছে। এছাড়া অস্বাস্থ্য খাদ্য নিয়ন্ত্রণে ৬টি এবং স্বাস্থ্যকর তাজা খাদ্য নিশ্চিতে ১১টি মন্ত্রণালয়ের ৩০টি বেশি আইন জড়িত। তবে এ সকল আইনগুলো প্রয়োগে স্বাস্থ্যের দিকগুলো গুরুত্ব পায় না। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলো এগিয়ে আসলেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে তৃতীয় বৃহত্তর দেশ। তারপরও আমাদের পুষ্টি ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে, স্বাস্থ্যসম্মত ও বৈচিত্রপূর্ণ খাবার গ্রহণে উৎসাহী করতে পারিনি। অনেকেই সবজি উৎপাদন করে, সকল পণ্য বিক্রি করছে পরিবারের জন্য রাখছে না। গ্রামের নাগরিকদের বসত বাড়িতে খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী করা জরুরি। নগর কৃষির লক্ষ্যে নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। স্কুলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বন্ধ এবং স্বাস্থসমত খাদ্য বিতরণের উদ্যোগ নেয়ারও সভায় সুপারিশ করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোরদের মাঝে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের শিশুরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুসারে পর্যাপ্ত শাকসবজি খায় না। তাই শাকসবজি গ্রহণের বিষয়টি শিখানোয় গুরুত্ব দিতে হবে। ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জর কথা উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, চিকিৎসার পাশাপাশি এ সকল রোগীদের, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন, আমাদের প্রায় স্কুলে শরীরচর্চার শিক্ষক নেই, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার কেউ নেই। ভেজাল খাদ্য ও জাঙ্কফুডের কারণে আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্য ক্ষতি হচ্ছে। সভায় হার্ট ভাল রাখতে শরীরচর্চা বাড়ানো, স্কুলগুলোতে শরীরচর্চা কেন্দ্র বা শরীরচর্চার ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়। বক্তারা সকল স্কুলে শরীর চর্চা ও সাঁতার বাধ্যতামূলক করা এবং শরীরচর্চার বিষয়ে নম্বর যুক্ত করার সুপারিশ করেন। হেলথ এডুকেশন সেশন স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি অস্বাস্থ্য খাদ্যের বিপণন, বিজ্ঞাপন বন্ধ করারও সুপারিশ করেন। বিজ্ঞপ্তি