শনাক্ত ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখি চট্টগ্রামে

29

করোনার দ্বিতীয়ধাপে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও বেড়েছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। চট্টগ্রামে শনাক্তের সংখ্যা বাড়লেও গত কয়েকদিন ধরে কমেছে নমুনা পরীক্ষা সংখ্যা। কয়েকদিন আগেও প্রতিদিন দুই হাজারের অধিক নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হতো। গত কয়েকদিন এ সংখ্যা হাজারে নেমে এসেছে। নমুনা কমলেও থেমে নেই সংক্রমণ। আগের তুলনায় বেড়েছে শনাক্তের হার। পাশাপাশি বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর তাগিদ সংশ্লিষ্টদের। চট্টগ্রাম সিভিলার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ১৩৮ জনের। এদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৯৩ জনের। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। একইভাবে ১৮ এপ্রিল ৯৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৫২ জনের শরীরে কোভিড পজিটিভ হয়। এইদিন নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। ১৭ এপ্রিল এক হাজার ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩০২ জনের করোনা পজিটিভ হয়। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১৬ এপ্রিল এক হাজার ৪৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৫ জনের করোনা পজিটিভ হয়। নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ। ১৫ এপ্রিল এক হাজার ৪৪২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৬৭ জনের কোভিড পজিটিভ হয়। এইদিন নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে গতকাল ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন আরও ৫ জন। এছাড়া ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এই নিয়ে চট্টগ্রামের করোনায় মারা গেছেন ৪৬৪ জন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ঊর্ধŸমুখি সংক্রমণের সময় নমুনা পরীক্ষা বেশি হওয়া প্রয়োজন। তাহলে সংক্রমিত ব্যক্তিকে আইসোলেশন করার পাশাপাশি কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে তার সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন করা সম্ভব। এতে সংক্রমণের বিস্তার রোধ করা সহজ হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান পূর্বদেশকে বলেন, নমুনা কমার অন্যতম কারণ হলো বিদেশগামী করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে আগে তুলনায় গড়ে ৮’শ নমুনা কমেছে। তবে সংক্রমনের হার বাড়ার কারণে নমুনা সংগ্রহের আওতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। এখন নির্দিষ্ট ল্যাব ছাড়াও ৬টি ভ্রাম্যমাণ বুথে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে করে আগের চেয়ে নমুনার সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে এক হাজার ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৯৩ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। এদের মধ্যে ২৪৯ জন নগরের ও ৪৪ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ২২৭ জন। এ সময় চট্টগ্রামে করোনায় ৫ জন মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন মোট ৪৬৪ জন। এদের মধ্যে ৩৪৩ জন নগরের ও ১২১ জন উপজেলার বাসিন্দা। ল্যাবভিত্তিক তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬০ জনের ও ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে ২১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের দেহে করোনা পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫২ জনের করোনা পাওয়া গেছে। ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫১ জনের ও শেভরন হাসপাতালে ২২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের ও আরটিআরএলে ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯ জনের করোনা ধরা পড়েছে।