লোহাগাড়ায় নারীর রহস্যজনক মৃত্যু দাফনে বাধা

21

লোহাগাড়ায় সফুরা খাতুন (৪৫) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যুর পর লাশ দাফনে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জঙ্গল বড়হাতিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গত সোমবার সকাল ৮ টায় ওই নারী মারা গেলেও গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দাফন দূরের কথা; কবরও খনন করতে পারেনি পরিবার। এসব তথ্য জানিয়েছেন মারা যাওয়ার সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের ছেলে লোকমান হাকিম।
নিহত সফুরা খাতুন (৪৫) উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের জঙ্গল বড়হাতিয়া এলাকার মোস্তফা আলীর ২য় স্ত্রী ও ৪ সন্তানের জননী।
পরিরবার সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে সফুরা খাতুনের স্বামী আবুল কাশেম মারা গেলে মোস্তফা আলী নামে প্রতিবেশি একজনকে বিয়ে করেন। সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের সন্তান লোকমান হাকিমের অভিযোগ, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে তার মা সফুরা খাতুনকে সৎ বাবা মোস্তফা আলী কয়েক দফা মারধর করে। পরের দিন ২৩ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ৮ টার দিকেও সফুরা খাতুনকে ফের মারধর করেন মোস্তফা আলী। এরপর দুপুরের দিকে স্থানীয়দের কাছে খবর পান তার মায়ের মৃত্যু হয়। লোকমান হাকিম বলেন, আমাদের মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সৎ বাবা মোস্তফা আলীর ভাড়া বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি আমাদের মা যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় বাসায় ছটফট করছিলেন সে সময় সৎ বাবা মোস্তফা আলী বাসায় ছিলেন। স্থানীয়রা মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে এগিয়ে গেলেও মোস্তফা আলী হাসপাতালে নিতে দেয়নি। আমাদের সন্দেহ মাকে দফায় দফায় নির্যাতনের পর কিছুর মাধ্যমে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে দিয়েছে অথবা গলাটিপে হত্যার পর কথিত বিষ পানের গুজব ছড়িয়েছেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠায়। চমেক হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে লাশ বাড়িতে আনার পর দাফনে বাঁধা দিচ্ছে মোস্তফা আলীর লোকজন।
স্বামী মোস্তফা আলী জানান, সামান্য তর্কবিতর্ককে কেন্দ্র করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী সফুরা খাতুন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বেলাল উদ্দিন জানান, সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের ছেলেরা দ্বিতীয় স্বামীর জায়গায় কবর দিতে চাইলে দ্বিতীয় স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা বাধা দিচ্ছে। ফলে কবর দিতে পারেনি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
লোহাগাড়া থানার ওসি জাকের হোসাইন মাহমুদ জানান, সফুরা খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, দাফন করতে না দেয়ার বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। আমি এ বিষয়ে এখনি খবর নিচ্ছি।