লোভ এক অসীম ক্ষুধা

30

 

লোভ মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য। কোনো না কোনোভাবে সবার মাঝেই এটির অবস্থান রয়েছে। হয়তো স্থিতিমানে কারো মাঝে সুপ্ত তো কারো মাঝে স্থুলকায়। তবে লোভ যতই সুপ্ত আকারে থাক না কেনো, এক পর্যায়ের প্রলোভন বা প্রণোদনা এটিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারে। লোভ থেকেই মানুষ লোভী হয়। সেক্ষেত্রে একজন লোভী মানুষের অপরাধমুখী হওয়াটাও খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। আর এরই সুযোগ নেয় কিছু সুযোগসন্ধানী, স্বার্থান্বেষী, দুষ্কৃতিকারী। যারা তাদের অন্যায়, অপকর্ম চালিয়ে যাওয়া বা নিজস্বার্থ উদ্ধার করার জন্য লোভকে চাহিদাসূত্রে প্রণোদনা দেয়। প্রয়োজনানুসারে একজন সাধারণ মানুষকে বানিয়ে দেয় উদগ্র লোভী বা লোভান্ধ। আর এই লোভের বশীভূত হয়েই মানুষ হারিয়ে ফেলে নিজস্ব হিতাহিত জ্ঞান। সংগঠিত করে নানান অন্যায়, অপরাধের। এক পর্যায়ে লোভ বা লোভীর অপরাধ হয়ে ওঠে অনিয়ন্ত্রিত। অপরাধপ্রবণতা তার মাঝে স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়।
মানবিক বোধ, চেতনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে ওঠে নিষ্ঠুর, অমানবিক। গড়ে ওঠে একজন আপাদমস্তক অপরাধী হয়ে, চলে আসে একজন অপরাধীর তালিকায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে আড়ালে থেকে যায় তারা, যারা লোভকে প্রলোভনে, প্ররোচনায় লোভী বা অপরাধী বানিয়ে তোলেন। যদিও একজন লোভী অপরাধীর মতই একজন প্রলোভন ও প্ররোচণাকারী কোনোদিক থেকে একেবারে নির্দোষ নয়।
পরিশেষে আমাদের মনে রাখা উচিত; লোভের কোনো আত্মতৃপ্তি নেই, লোভ অসীম এক ক্ষুধা। তাই এই ক্ষুধায় ক্ষুধার্ত না হয়ে আমাদের সংযমী ও সংবরণী হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাদেরকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত যারা আমাদের লোভকে উৎসাহ দিতে চায়। তাই একজন সৎ, ন্যায়াধীশ মানুষ হয়ে আমাদের সবসময় সচেতন ও সতর্কতার মধ্য দিয়ে লোভ এবং এর প্রণোদনাদাতাকে এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।