লেবু ডজন ২৪০ ও কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা

15

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাজীর দেউরি বাজারে ঢুকতেই লম্বা সালাম, টানাটানি-দোকান পর্যন্ত টেনে নেয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা বিক্রেতাদের। কিছুটা অসহায়, বাজেটে টান পড়ার ভয়ে ভীত ক্রেতা ধীর পায়ে হাঁটা-দেখা, পণ্যের দিকে। গতকাল শাক-সবজির দোকানের দিকে বাসা থেকে দেয়া তালিকা খুলতেই চোখে পড়ল তালিকার শীর্ষে লেবু-কাঁচা মরিচ। ‘লেবু কত করে’-জানতে চাইলে বলা হয় ২০ টাকা করে একটির দাম। বললাম মানে কি। তখন বিক্রেতা বলল ডজন ২৪০ টাকা। কম কত-বিক্রেতা বলল একদাম। ৬টা লেবু কিনলাম ওই দামেই। এক সপ্তাহ আগেই এ লেবু বিক্রি হয়েছে এক হালি ২৮/৩০ টাকায়।
বাজারের তালিকায় ২ নম্বরে কাঁচা মরিচ। দাম কত-জানতে চাইলাম একই বিক্রেতার কাছে। জানাল ১২০ টাকা। এক কেজি নিলে ১০ টাকা কমিয়ে রাখা হবে। এত দাম কেন? বিক্রেতা বলল ‘দাম বেড়ে গেছে’-কিছু করার নেই। অথচ একই কাঁচা মরিচ পাইকারিতে ৪০/৪২ টাকা। বাদানুবাদ না করে আড়াইশ গ্রাম কাঁচা মরিচ নিলাম। শুধু কাঁচা মরিচ-লেবুই নয়, রমজানকে ঘিরে বাড়তি দাম নেয়া হচ্ছে শসা, গাজর, বেগুন এমনকি তিত করলারও। ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া তিত করলাও এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০/১১০ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেল, প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। গত সপ্তাহে শসা বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি গাজর গতকাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
চকবাজার এলাকায় বাজার করতে আসা ক্রেতা মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘মাঝারি আকারের একটি লেবু ২০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। ৩-৪ দিন আগেও ৪০ টাকা করে নেওয়া শসা আজ (শুক্রবার) চাওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা। রোজার মাসেও মানুষ একটু শান্তিতে বাজার করতে পারছে না। বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি বেগুন কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। অথচ তিন দিন আগেও বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকার আশপাশে পাওয়া গেছে। আর প্রতি জোড়া মাঝারি আকারের লেবু ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দুই দিন আগেও তা ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা।’
এদিকে নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে গতকাল শুক্রবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। অন্যদিকে মানভেদে শসা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকা, আকারভেদে বেগুন ২৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর মাঝারি আকারের লেবু বিক্রি হয়েছে প্রতিটি ৮ থেকে ১০ টাকায়। অর্থাৎ, পাইকারি বাজারের চেয়ে দ্বিগুণ দামে খুচরা বাজারে সবজি বিক্রি হচ্ছে।
রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী বলেন, ‘রমজানে শসা, বেগুন আর গাজরের চাহিদা বাড়ে। কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার আশায় বাড়তি দাম নিচ্ছেন। পাইকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে সব সবজির।’ রিয়াজউদ্দিন বাজারে খুচরা পর্যায়েও দাম স্বাভাবিক আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।