লিখিত অভিযোগের পর তদন্তে নতুন মোড়

37

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের পর তদন্তে নতুন মোড় নিয়েছে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটি আরও সাত দিনের সময় চেয়েছে। এসময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা জানান চমেকের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।
এদিকে চার শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে গতকাল মঙ্গলবার কলেজের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রুটিন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সম্প্রতি কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা হয়েছে। চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের পর এর প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটি আরও সাত দিনের সময় চেয়েছে। এই সময়ে মধ্যে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও কলেজে শিক্ষার্থী নির্যাতন ঠেকাতে করণীয়সহ সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর ১২ টায় হোস্টেল সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কলেজে আরেকটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে রুটিন কার্যক্রমসহ কলেজে ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটি আরও ৭ দিনের সময় চেয়েছে। যেহেতু চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। সেখানে উল্লেখিত বিষয়গুলো তদন্ত করতে নতুন করে সময় বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, বুধবার দুপুর ১২ টায় হোস্টল সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি মিটিং হবে। বর্তমানে কলেজের হোস্টেলে লোকবলের সংকট রয়েছে। এ কারণে মনিটরিং কার্যক্রম ও লোকবলের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
গত ৮ ফেব্রæয়ারি (বুধবার) গভীর রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষ থেকে শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন চমেকের ৬২তম ব্যাচের ছাত্র এম এ রাইয়ান, মোবাশ্বির হোসাইন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেন। আহতদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে চমেক হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। বাকী দুইজনের মধ্যে আহত এমএ রাইয়ান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শুভ্র নারায়ণগঞ্জে একজন অর্থোপেডিকস বিভাগের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
তারপর গত শনিবার দুপুরে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং চলাকালীন সময়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মুখোশধারীরা চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে একাধিকবার ঢুকে তাদেরকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এরপর থেকে আইসিইউতে পুলিশি নিরাপত্তায় রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
৪ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। উপাধ্যক্ষ ডা. মো হাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তবে চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের পর তদন্তে নতুন মোড় নেয়। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের জন্য আরও সাত দিনের সময় বাড়ানো হয়।