লামায় বসতঘরে ডাকাতি

27

বান্দরবানের লামা উপজেলায় গভীর রাতে এক ব্যবসায়ীর বসতঘরে ফিল্মি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি অংশার ঝিরি এলাকার মৃত সুলতান আহম্মদের ছেলে আলী জহুরের বাড়িতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতের হামলায় ঘরের ২ জন আহত হন। ৮-৯ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল দেশীয় গাদা বন্দুক, দা ও লম্বা ছুরি নিয়ে ঘরে ডাকাতি করে। আহতরা হলেন ঘরের মালিক আলী জহুরের ছোট ভাই মো. রফিক, ও তার ভাই আবুল কালাম। এদিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারে এমন ধারনা করতে পেরে আগে থেকেই আলী জহুর তার বসতঘরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে রাখেন। যেখানে সন্ত্রাসীদের হামলার দৃশ্য ভিডিও ধারন হয়। ডাকাতি ও হামলার এ বিষয়ে কথা হয় অংশা ঝিরির বাসিন্দা আলী জহুরের সাথে। তিনি জানান, গত ১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উত্তর মালুম্যা পাড়া থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা চা বাগানের ভেতর ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল আমিনসহ আরো ২জন মিলে ১টি ছাগল চুরি করে জবাই করতে আমি দেখে ফেলি। তখন তাদেরকে ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে ২জন পালিয়ে গেলেও নুরুল আমিনকে হাতে নাতে ধরে ফেলি।
পরবর্তীতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিযদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার শালিশী বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনার সমাধা করে দেন। শালীশে নুরুল আমিনকে ছাগল চুরির অপরাধে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছাগলের প্রকৃত মালিক শামশুল আলমকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। আলী জহুর আরো বলেন, এ দিন নুরুল আমিন এবং তার বড় ভাই আমাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। আমি এবং আমার পরিবারের ধারনা সিএনজি বিক্রির নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আমার ঘরে রক্ষিত আছে এ সংবাদ পেয়ে এবং পূর্ব শত্রূতার জের ধরে নুরুল আমিনসহ অজ্ঞাতরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। রাত আনুমানিক ১টার সময় ডাকাত দল বাড়ির আলমিরা ভেঙ্গে নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং আমার স্ত্রী জেসমিন বেগমের গলার গহনা ও ছোট বোনের কানের দুল সহ প্রায় ২ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ডাকাতদের গুলিতে আমার ছোট ভাই মো. রফিক ও ভাই আবুল কালাম আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে কাছাকাছি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
জানা যায়, ডাকাত দল সংখ্যায় ৮ জন ছিল, পরনে ছিল সাদা শার্ট ও কালো জিন্সের প্যান্ট, কয়েকজনের মুখে মুখোশ পরা ছিল এবং তারা চাটগাইয়া ভাষায় কথা বলছিল। তাদের হাতে ছিল একটি দেশীয় রিভলবার ও একটি একনলা গাদা বন্দুক, দা-ছুরি। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, ঘটনাটি খুবই ভয়ংকর হয়েছে। ছবি ভিডিওতে যা দেখলাম তাতে রীতিমত ভয় পাওয়ার মত। তবে সিসি ক্যামেরায় আসামীদের চেনা যাচ্ছেনা।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।