লাফ দিয়েই লাপাত্তা কারাবন্দি রুবেল!

51

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারাবন্দি রুবেল গত ৬ মার্চ ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে পালিয়েছেন এমনটিই জানিয়েছেন কারা কতৃপক্ষের তদন্ত কমিটি। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন ছগীর মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান। কারা অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশের সীমানায় লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করেছেন। এ অবস্থায় কারাগারের ভেতরে বাইরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
ডিআইজি ছগীর মিয়া পূর্বদেশকে জানান, অন্যান্য বন্দির সাথে তাকে রাখা হয়েছিল কর্ণফুলী ভবনের (১৫ নম্বর ‘পানিশমেন্ট’ ওয়ার্ড ) ছয়তলায়। যেসব বন্দি অপরাধ করে তাদের ওই ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টা সেখানে বন্দি রাখা হয়। তিনি বলেন, সেদিন একটি সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায় কর্ণফুলী ভবনের নিচতলা দিয়ে বের হন রুবেল। ৫টা ১৫ মিনিটে আরেকটি সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে বন্দি রুবেলকে ফাঁসির মঞ্চের পাশের ভবন থেকে সীমানা দেয়ালের বাইরে লাফ দিতে দেখা যায়। ফলে প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত যে, রুবেল কারাগার থেকে পালিয়েছে।
এর আগে বন্দি রুবেল নিখোঁজের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের জেল সুপার ইকবাল হোসেন এবং বান্দরবান জেলা কারাগারের জেলার ফোরকান ওয়াহিদ।
সোমবার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে এসে এ কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করে। একই সাথে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা ড্রেনগুলোতে তল্লাশি শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। দুপুর পর্যন্ত ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকগুলোতে হাজতি রুবেলের খোঁজ না পাওয়ার কারণে সেখানে যুক্ত হয় আরও একটি সার্চ এন্ড রেসকিউ টিম। ফায়ার সার্ভিস এ্নড সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, কারাগারের ভেতরে থাকা ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকে কাজ করছে ৩ সদস্যের একটি ডুবুরি দল। অন্যদিকে রেসকিউ টিমে রয়েছে ১১ জন সদস্য। সব মিলিয়ে দু’টি দলে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৪ জন সদস্য কাজ করেন।
আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কফিল উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম কারাগার থেকে এক হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় অভিযান চালিয়েছে দু’টি দল। এদেরকে নন্দনকানন এবং আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে। তারপরও তাকে আমাদের টিম খুঁজে পায়নি।
কারা সূত্র জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কারাগারের ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের ‘পানিশমেন্ট’ ওয়ার্ডে হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেলসহ অন্য আসামিদের রুমে তালাবদ্ধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শনিবার ভোর ৬টায় যখন আবার কক্ষের তালা খোলা হয়, তখন হাজতিদের রোলকল করা হয়। তখনই সন্ধান মিলছিল না রুবেল নামের ওই হাজতির।