লাগাতর বর্ষণে নাইক্ষ্যংছড়ির অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা

34

এক সপ্তাহের লাগাতর প্রবল বর্ষণে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়ক দিয়ে গাড়ি যোগাযোগ তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে যাতায়াত করাও এখন মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, বাইশারী, ঘুমধুম, দৌছড়ি ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ প্রায় সড়কগুলো প্রবল বর্ষণে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কগুলো দিয়ে হেঁটে চলাচলও এখন কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ইট বসানো সড়কগুলোর ইট উপড়ে পড়ে আছে। এছাড়া কোথাও কোথাও সড়ক ভেঙ্গে ছোট ছড়ায় পরিণত হয়েছে।
বাইশারী ইউনিয়নের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, লাগাতার বর্ষণে অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা ঘটলেও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র সড়ক, মধ্যম বাইশারী সড়ক, লম্বাবিল-করলিয়ামুরা সড়ক সহ প্রতি সড়কের কোনো না কোনো অংশ তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। এসব সড়ক দিয়ে বাইশারী ছাড়া রামু উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ ও কলেজ-স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া কয়েক শতাধিক ছাত্র ছাত্রীরা চলাচল করে থাকে প্রতিদিন। এসব জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো দীর্ঘকাল যাবৎ মেরামত না করায় প্রবল বর্ষণে করুণ দশায় পরিণত হয়েছে।
বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্য তাওহীদুল ইসলাম আপন বলেন, তদন্ত কেন্দ্র সড়কটির বেহাল দশার জন্য কোন কাজে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছা মুশকিল হয়ে পড়েছে। যার কারণে জন-নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। তিনি সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন- নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য পুলিশ সদস্যরা যাতে দ্রুত ঘটনাস্থল পৌঁছাতে পারে এবং জনসাধরণ ও যেন চলাচল করতে পারে সকল বিষয় চিন্তা করে জায়গার জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের মহাজন ঘোনার বাসিন্দা জাকের আহমদ দুঃখের সাথে তার ফেসবুক ওয়ালে বলেন, মাহাজন ঘোনার জনগণের দুঃখের খবর নেওয়ার কেউ নেই। আমি অনেক কেঁদেছি আমার কান্নার আওয়াজ কেউ শুনেনি। কোন জনপ্রতিনিধি কি আছেন? মহাজন ঘোনার জনগণের চোখের জল মুছে দিতে। মহাজন ঘোনার জনসাধারণ আপনার কাছে চিরঋণী হয়ে থাকবে। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, লাগাতার বর্ষণে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়া সড়কগুলো পরিদর্শন করেছি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনাইছড়ির বাসিন্দা সুমন চৌধুরী জানান, লাগাতার প্রবল বর্ষণে সোনাইছড়ির সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। এছাড়া সোনাইছড়ির অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর মাটি সরে গিয়ে তীব্র ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। শীঘ্রই সড়ক সংস্কার না করলে জনসাধারণের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে।
ঘুমধুমের বাসিন্দা সিরাজুল হক বলেন- দীর্ঘদিন ধরে ঘুমধুমের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কার হয়নি। তাছাড়া এক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে সড়কগুলো আরো বেশি ভেঙ্গে গেছে। তিনি সরজমিনে পরিদর্শন করে দ্রুতগতিতে সড়কগুলো সংস্কারের আহবান জানান।