লকডাউন তুলে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে

16

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে গতকাল শুক্রবার মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন আলাদা একটি বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, লকডাউন তুলে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
বিবৃতিতে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস সারাদেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা সংক্রমিত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইসিইউ, অক্সিজেন, সিলিন্ডার ও বেডের ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অব্যবস্থাপনার কারনে করোনা রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগীরা ভর্তি হতে পারছে না। চিকিৎসার অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এখন মৃত্যু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত ২৫ মে থেকে ৪ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৮৮ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৪২৯ জন মানুষ। এরমধ্যে চট্টগ্রাম শহরেরই আক্রান্ত হয়েছে ৮০% লোক। অপরদিকে চট্টগ্রামের করোনা হাসপাতালে বেড আছে মাত্র ৩১০টি। এ অবস্থায় চিকিৎসা সুবিধা না বাড়িয়ে ৩১ মে থেকে লকডাউন খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। এতে চট্টগ্রামের মানুষ সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখিন হবে। লকডাউন খুলে দিলে চট্টগ্রাম মৃত্যুপূরীতে পরিণত হবে।
ডা. শাহাদাত বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ডাক্তার এবং মেডিকেল স্টাফদের সুবিধাদির মধ্যে চরম বৈষম্যের কারণে বেসরকারী ডাক্তার ও স্টাফরা সর্বাত্বকভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এই বৈষম্য দূর না করলে চট্টগ্রামে চিকিৎসা সেবা আরো কঠিন হয়ে যাবে। এমনিতে পুরো দেশ এখন করোনার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। করোনা পরীক্ষায় ২২% রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণের এই সময়ে সবকিছু খুলে দেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের সেবা দিতে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে মৃত্যু ও সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার আগাম সংবাদ পাবার পরও তারা কোন ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারেনি। পোশাক কারখানা ও দোকানপাট খোলার বিষয়ে শীতিলতা আসার পর থেকেই চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব ভেঙ্গে পড়ে। এতে চট্টগ্রামে পর্যায়ক্রমে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর হার।
চট্টগ্রামবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর চট্টগ্রাম এখন হটস্পটে পরিনত হয়েছে। চট্টগ্রাম যদি মৃত্যুপূরীতে পরিনত হয় তাহলে দেশের অর্থনীতি বিকল হয়ে যাবে। তাই এই মুহুর্তে জরুরী ভিত্তিতে চট্টগ্রামে প্রচুর ফিল্ড হাসপাতাল ও আইসোলেশন হাসপাতাল তৈরি করতে হবে।
অন্যদিকে একদিন আগে বিবৃতিতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার করোনা মোকাবেলা ও জনগণের চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে দিন দিন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনার চিত্র ফুটে ওঠেছে। মানুষের মধ্যে এখন মৃত্যু আতঙ্ক বিরাজ করছে।