রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আটক ১০

42

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ফাইভের অদূরে ৬নং ক্যাম্পে অবস্থিত নৌকার মাঠের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গত শনিবার রাতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্প ইনচার্জসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে রোহিঙ্গারা তাদের উপর চড়াও হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়া সেনা বাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।
গ্রেপ্তারকৃত হলেন কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর মো. ইসমাইল (২৩) পিতা আব্দুর রহিম, কুতুপালং-৬ এর মাহমুদ হোসেন (৩০) পিতা মোহাম্মদ জলিল, ক্যাম্প-২ এর মোহাম্মদ আলম (১৮) পিতা হাবিব উল্যাহ, মোহাম্মদ (২৯) পিতা ছৈয়দ আলম, ভুট্টু আলম (৫০) পিতা সাহাব মিয়া, ক্যাম্প-৭ এর মো. রফিক (১৪) পিতা শামসুল আলম, ক্যাম্প-৬ এর মোহাম্মদ ইউনুছ (১৮), পিতা মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ রফিক (১৮) পিতা আলী আহম্মদ, মোহাম্মদ আমিন (১৮) পিতা দিল মোহাম্মদ, ক্যাম্প-৭ এর খায়ের মোহাম্মদ (৫৫) পিতা জাহেদ হোসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে ক্যাম্পে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। যেকোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার দুপুর ১টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্পের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, কুতুপালং ডি-ফাইভের অদুরে ৬নং ক্যাম্পে নৌকার মাঠ এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল আল ইয়াকিন গ্রুপের নেতা ইসমাইল। সেখানে কয়েক’শ দোকান-পাঠ রয়েছে। দোকানগুলো থেকে তারা নিয়মিত চাঁদা নেয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তিন মাস আগে ইউনুছ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার সুযোগে নৌকার মাঠ দখল নেয় আরসা গ্রুপের লিডার মার্স নামের এক সন্ত্রাসী।
পরে ইউনুছ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নৌকার মাঠ পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে ইতিপূর্বে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে আল ইয়াকিনের লিডার ইউনুছ গ্রæপ নৌকার মাঠটি দখলে নিতে গেলে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশ-সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গারা। এ সময় পুলিশ ৭-৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে ১০ রোঙ্গিাকে আটক করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাত জানান, কালো হাফ প্যান্ট পরিহিত হাজার হাজার রোহিঙ্গা দা-কিরিচ নিয়ে একে অপরের উপর হামলা চালায়। মনে হচ্ছিল একটি রণক্ষেত্র।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, আটক ১০ রোহিঙ্গাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।