রোহিঙ্গাদের আবাসন মেয়াদ ও ব্যয় বাড়লো ভাসানচর প্রকল্পের

52

রোহিঙ্গাদের আবাসনের জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে চলমান প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যয় ৭৮৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার।
এই দ্বীপকে রক্ষাকারী বাঁধের উচ্চতা, আনুসঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণে এই বাড়তি অর্থ ব্যয় হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্প ব্যয় সংশোধনের এ প্রস্তাবে চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানাধীন চরঈশ্বর ইউনিয়নস্থ ভাসানচরে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আবাসন এবং দ্বীপের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক (আশ্রয়ন-৩) এ প্রকল্পের ব্যয় আগে ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
আশ্রয়ন-৩ প্রকল্পের আওতায় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বনায়ন করা হবে। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এদিন বৈঠকে ভাসানচর প্রকল্পের সংশোধনীসহ মোট নয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ২২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগানো হবে।
আশ্রয়ন-৩ প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, বসবাসকারীদের জন্য দ্বীপ রক্ষাকারী বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট বাড়িয়ে ১৯ ফুট করা হবে।
এছাড়া গুচ্ছগ্রাম, শেল্টার স্টেশন, পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো, ও অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণসহ প্রায় ২৬টি বিদ্যমান অঙ্গের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি ৪৩টি নতুন অংশ সংযোজন করা হচ্ছে।
নতুন সংযোজনের মধ্যে জেটি নির্মাণ, জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন, কালভার্ট ছোট আকারের লেক খনন এবং আরসিসি র‌্যাম্প নির্মাণের কাজ রয়েছে। ২০১৭ সালে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালে শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা অবশ্যই এক সময় চলে যাবে। তাদের চলে যেতে হবে। এরপর ওই অবকাঠামো দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ দিয়ে তাদের আবাসানের ব্যবস্থা করা হবে। তাই দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।
এদিন বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল-খাদ্যশস্যের পুষ্টিমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রিমিক্স কার্নেল মেশিন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধনী) প্রকল্প। এর ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ২২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজির স¤প্রসারণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ২৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
দিঘলিয়া-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের প্রথম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর ওপর ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ৬১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর-ধুনট-শেরপুর এবং সিরাজগঞ্জ-ধুনট মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৮ কোটি কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন, সংসদ সদস্য ভবন ও এমপি হোস্টেল আনুষঙ্গিক স্থাপনার নির্মাণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ২৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (দ্বিতী সংশোধিত) প্রকল্প। এতে ব্যয় বাড়োনো হয়েছে ২৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। এর ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।