রোজা ও কোরআন রোজাদারদের জন্য সুপারিশ করবে

10

আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী

পবিত্র কোরআন মজিদ অবতরণের পূণ্যময় মাস রমজানুল মোবারক। লাওহে মাহফুজ থেকে নিকটবর্তী আসমানে রমজান মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। মহান আল্লাহ্র পবিত্র বাণী সর্বশ্রেষ্ঠ মহা আসমানি কিতাব অবতরণের কারণেই এই মাসের শ্রেষ্ঠত্ব। এ মাস আল্লাহ্র মাস। পবিত্র কোরআন মানব জাতির জন্য মুক্তির দিশারী, সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। সকল আসমানী কিতাব সমূহের সারাংশ, সকল জ্ঞানের ঝর্ণাধারা, হিদায়তের সমষ্টি, রহমত এবং বরকতের ভান্ডার, এমন নূর যা দ্বারা পথ ভ্রষ্টতার সকল অন্ধকার দূর হয়ে যায়, যা মানুষের জাহির এবং বাতিনকে পবিত্র করে দেয়। এমন বিশ্বস্ত সাথী যে কবরে ও হাশরে বিশ্বস্ততার সাথে সঙ্গ দান করবে। মহান আল্লাহ বলেন, এটা (আল কোরআন) মানবজাতির জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও পথ পদর্শন এবং পরহেজগারদের জন্য উপদেশ। (সূরা আলে ইমরান: আয়াত ১৩৮)
পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহ্র নির্দেশে হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুভাগমন করে পবিত্র কোরআন পরস্পর তেলাওয়াত করতেন। এই মাসে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত আগ্রহের সাথে কোরআন তেলাওয়াত করতেন এবং সাহাবীদেরও কোরআন তেলাওয়াতের নির্দেশ দিতেন। তাই আমাদের উচিত এই মাসে পবিত্র কোরআন বেশি বেশি তেলাওয়াত করা। বিশুদ্ধ ভাবে তেলাওয়াত করা। পবিত্র কোরআনের মর্মার্থ অনুধাবন করা এবং কোরআন নির্দেশিত পন্থায় জীবন অতিবাহিত করা।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়। এমন একটি সময় ছিল যখন পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের ঘরে ঘরে কোরআন তেলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ভেসে আসতো, যা রমজানের সৌরভকে ছড়িয়ে দিত। রমজান মাসে পবিত্র কোরআন পড়া ও শেখা বেশি উত্তম আমল। আলহামদুলিল্লাহ্! পবিত্র মক্কা ও মদিনায় এবং আমাদের দেশে রমজান মাসে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সাথে তারাবিহ্ এর নামাযে পবিত্র কোরআন মজিদের খতম আদায় হয়। সারাদিন রোজা রেখে প্রত্যহ তারাবিহ্ নামায আদায়ে রোজাদাররা কোন অলসতা করে না।
রোজাদারের জন্য একটি সুসংবাদ হলো-কিয়ামতের ভয়াবহ দিন যেদিন সকলের কৃতকর্মের বিচার হবে, যেদিন সকলে ভয়ে দিক বিদিক ছুটোছুটি করবে যখন আপনজন ধন-সম্পদ কোন কাজে আসবে না। সে কঠিন মূহুর্তে রোজা ও পবিত্র কুরআন আল্লাহর দরবারে পাঠ কারীদের জন্য সুপারিশ পেশ করবে। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘রোজা এবং কুরআন শরীফ উভয়ই বান্দার জন্য কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে। রোজা বলবে-হে আমার দয়ালূ প্রতিপালক আমি আহার ও প্রবৃত্তিগুলো থেকে দিনে তাকে বিরত রেখেছি,আমার সুপারিশ তার পক্ষে কবুল করুন, কুরআন শরীফ বলবে, আমার কারণে সে রাত্রিকালে শয়ন করে নাই। তার জন্য আমার সুপারিশ কবুল করা হোক। অতপর আল্লাহ তা‘আলা উভয়ের সুপারিশই গ্রহণ করবেন। আল্লাহ্ আমাদের রোজা ও কোরআনের সুপারিশ নসিব করুন। আমিন।