রোজায় বাজারে নজরদারি করবে ব্যবসায়ী কমিটি

8

পূর্বদেশ ডেস্ক

রোজার মাসে ঢাকাসহ সারাদেশে নিত্য পণ্যের বাজারে নজরদারির পাশাপাশি সরবরাহ, উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে নিত্য পণ্যের মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এ কথা জানান।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারাবিশ্বে উৎসবকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমান। বাংলাদেশেও এমন সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। খবর বিডিনিউজের
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, রমজানে সারা দেশের বাজার মনিটরিংয়ের জন্য এফবিসিসিআইর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৪৬টি নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে এই মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব সদস্যরা নিজেদের অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের দিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে বাজার পর্যবেক্ষণ করবেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর, সরবরাহ পরিস্থিতি, উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজারদর সংগ্রহ ও পর্যালোচনা ও সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন করবেন এই কমিটির সদস্যরা।
বিশ্ববাজারে বিভিন্ন কাঁচামাল ও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে সরকারের প্রতি কর এবং শুল্কহার সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, যেহেতু পণ্যের দাম ও শিপিং খরচ বেড়েছে, তাই শুল্ক ও করহার কমানো উচিত। আমদানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি অনুযায়ী করহার সমন্বয় করলে রাজস্ব আদায় কমে না, কিন্তু সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ও জাহাজ ভাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রাপ্ত ঋণসীমা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মূলধন ঋণ সীমা অন্তত ৪০ শতাংশ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
অনুষ্ঠানে রাজধানীর মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন বলেন, সরবরাহ ঠিক থাকলে বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে।
একই আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, মিল মালিকদের নিয়ে আমাদের অভিযোগ ছিল, সেটা এখন অনেকটাই ঠিক হয়ে গেছে। আগামী এক মাসের জন্য প্রয়োজনীয় তেল মজুদ এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকায় ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ অয়েল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, বিক্রির আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তেল সরবরাহ করতে হয়। তাই মিল মালিকদের তেল মজুদ করে রাখার সুযোগ নেই। এখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লেও সরকার নির্ধারিত প্রতি লিটার পামতেল ১২৭ টাকা এবং প্রতিলিটার (খোলা) সয়াবিন ১৩৩ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে টিকে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আতহার তাসলিম বলেন, গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর বাজার কারসাজির কারণে গোটা ব্যবসায়ী সমাজকে দায় নিতে হচ্ছে। তবে রমজানে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। মিলমালিকদের কাছে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে এবং বাজারেও সরবরাহ ঘাটতি হবে না।