রেললাইনে স্কুলগাড়ি, ট্রেনের ধাক্কায় উড়ে গেল ২শ ফুট

48

চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে নগরগামী লোকাল ট্রেনের সাথে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মাইক্রোবাসে থাকা এক নারী ও চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন মাইক্রোবাসের চালক আজিজুল হক (৬০) ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের আয়া লক্ষী রাণী (৪৫)।
গতকাল বুধবার সকালে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ ছড়ারকুল এলাকায় স্থানীয় বদর পীর সড়ক দিয়ে রেললাইন অতিক্রম করার সময় লেভেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত মাইক্রোবাস চালক আজিজুল হক উপজেলার লালিয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা এবং স্কুলের আয়া লক্ষী রাণী চৌধুরীহাট এলাকার বাসিন্দা। মাইক্রোবাসটি অন্তত ১২ শিক্ষার্থীকে আনার জন্য পশ্চিম ছড়ারকূলের দিকে যাচ্ছিলো।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো সকাল ৭টা ৩৪ মিনিটের দিকে উপজেলার বড়দিঘির পাড় এলাকার রওশন গ্রামার স্কুলের একটি মাইক্রোবাস (চট্টমেট্রো চ-৫১-০২৫৯) পশ্চিম ছড়ারকুল খাগড়িয়া এলাকা থেকে ১২ শিক্ষার্থীকে (শিশু) আনতে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাসটি স্থানীয় বদর পীর সড়ক দিয়ে রেললাইন অতিক্রম করার সময় নাজিরহাট থেকে নগরগামী লোকাল ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। ফলে মাইক্রোবাসটি প্রায় ২০০ ফুট দূরে রেললাইনের উপর ছিটকে পড়ে এবং দুমড়ে মুচড়ে যায়। বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রেনটি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ওই ট্রেনের চালক মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আজ গেইটম্যান না থাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটল। এ সময় গেইটম্যান উপস্থিত না থাকায় ব্যারিয়ার নামানো হয়নি। ঘটনার পর পর ওই গেইটম্যান পলাতক রয়েছে। এদিকে আহত দুইজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে আয়া লক্ষী রাণীর অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন বলে জানান বড়দিঘির পাড় এলাকার রওশন গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ মেজর (অব.) নুরুল হুদা।
হাটাহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোল্লা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ওই লেভেল ক্রসিংয়ে গেইট থাকলেও গেইটম্যান উপস্থিত না থাকায় ব্যারিয়ার নামানো হয়নি। গেইট খোলা দেখে চালক মাইক্রোবাস নিয়ে রেল লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করে দুর্ঘটনায় পড়েন। দুর্ঘটনার পর থেকে গেইটম্যানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ দুর্ঘটনার কারণে সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী বেশ কয়েকটি শাটল ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত হয় বলে ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তন্ময় চৌধুরী জানান। তবে বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানা গেছে।