রেলওয়ের সব পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাবে চট্টগ্রাম

81

রেলওয়ে আধুনিকায়নে যে পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে তার প্রভাব চট্টগ্রামেও পড়বে জানিয়ে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, কক্সবাজারে রেললাইন হবে, মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, বন্দর আধুনিকায়ন হবে, সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এসব উন্নয়নের সাথে রেলওয়েও যুক্ত আছে। সুতরাং রেলওয়ের আগামী সব পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাবে চট্টগ্রাম।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শনকালে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় মন্ত্রী পুরো কারখানা ঘুরে দেখেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এর আগে হালিশহর রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমি, পোর্ট ইয়ার্ড এবং বিকালে শাটল ট্রেন ও স্টেশন পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে যান রেলমন্ত্রী।
সকাল সাড়ে ১১টায় কারখানায় প্রবেশ করেই মন্ত্রী ট্রেন লাইটিং শপে প্রবেশ করেন। মন্ত্রী উপস্থিত কারখানা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘সমস্ত মিটারগেজ রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে হবে। ওয়ার্কশপে ছাদ ভেঙে পড়েছে তা যেন শুনতে না হয়। ট্রেনের সিট থেকে শুরু করে সবকিছু আধুনিকায়ন করতে হবে। বাইরে থেকে যেসব কোচ আসছে সেগুলো দেখতে হবে।’ পরে ক্যারেজ শপ, পেইন্ট শপ, জিওএইচ শপ, হুইল শপ, স্মিথি শপ, ফাউন্ডি শপ, মেশিন শপ, সিএসআর শপ ও ডিজেল শপ পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম পাহাড়তলী কারখানায় এসেছেন জানিয়ে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেলের বহু প্রকল্প গ্রহণ করেছি। রেলকে আধুনিক ও মানসম্মত সেবা দেয়ার মানসিকতায় এ কারখানাগুলোকে আধুনিকায়ন করে কি পর্যায়ে নিতে পারি সে চেষ্টা করছি। বর্তমানে সক্ষমতা কোন অবস্থায় আছে সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিতেই এখানে এসেছি। আমি নিজে বিশেষজ্ঞ নই। রেলের ডিজিসহ যাদের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে তাদের সাথে পরামর্শ করে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করবো।’
রেলওয়ে কারখানার সক্ষমতা ও ঈদ প্রস্তুতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে কারখানায় দিনে একটির বেশি গাড়ি রেডি করা যেতো না। এখন দুটি গাড়ি রেডি হয়। ইতোমধ্যে অনেক গাড়ি ডেলিভারি দিয়েছি। গত ঈদুল ফিতরে যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম এবারো সেভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এবার আরেকটি নতুন ট্রেন বেনাপোলের সাথে যুক্ত হয়েছে। এবার ঈদে আটটি স্পেশাল ট্রেন চালাবো।’
গত ঈদে অ্যাপসে টিকিট ভোগান্তি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখনো এ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি আমরা আউটসোর্সিং করছি। চাপ সামাল দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তারা আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এবারো আমরা ৫০ শতাংশ টিকিট মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে দিব। অ্যাপসের মাধ্যমে ভোর ৬টা থেকে এবং কাউন্টারে সকাল ৯টা থেকে ঈদের টিকিট দেয়া হবে। রেলকে যেন ঐতিহ্যের সক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারি সে চেষ্টা চলছে।
নতুন ট্রেনের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে তিনটি নতুন ট্রেন চালু করেছি। আগামী বছরের জুনের মধ্যে আরো ১২টি ট্রেন চালু করবো। আগামী জুনের মধ্যে মিটারগেজের ২০০ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পাবো। ১০টি লোকোমোটিভ পাবো। এগুলো পেলেই আরো ১২টি নতুন ট্রেন চালু করতে পারবো। এরমধ্যেই এ বছর ৪-৫টি নতুন ট্রেন চালু করবো।
মিটারগেজের ২৬টি কোচ দিয়ে নতুন ট্রেন চালু করার বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, একটি মাত্র ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস মিটারগেজে যাওয়া-আসা করে। ঈদের সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি। ৫-৭ ঘণ্টা শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। একটা ট্রেনেই যায় একটা ট্রেনেই আসে। কাজেই ওটাকে মাথায় রেখে আমরা চেষ্টা করছি ওই রুটে নতুন একটি ট্রেন যুক্ত করতে। পশ্চিমাঞ্চলের বগুড়া, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা অঞ্চলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা মিটারগেজ। সে কারণে আমাদের দুটি ট্রেন দেয়ার পর পূর্বাঞ্চলে কোথায় ঘাটতি আছে সেটা দেখা হবে।