রেজিস্ট্রেশন এক, গাড়ি অনেক ডিবি ও ট্রাফিকের হাতে ধরা

17

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর বিভিন্ন টেম্পু রুটে একটি মাত্র রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে দুই বা ততোধিক টেম্পু চলাচল করছে। এমন অভিযোগ টেম্পু মালিকরা করলেও তা পুলিশের হাতে সহজেই ধরা পড়ে না। কারণ এসব গাড়ির মলিকরা একই রুটে দুইটি টেম্পু একসাথে রাখেন না। আর পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও একটি গাড়ির কাগজপত্র দিয়ে অপর গাড়িটিও সুবিধা নেয়।
এমন একটি তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা ও ট্রাফিক বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় বহদ্দারহাট এলাকা থেকে একটি মাহিন্দ্রা টেম্পু ও কালামিয়া বাজার এলাকা থেকে আরেকটি মাহিন্দ্রা টেম্পু আটক করে ডিবি ও ট্রাফিক পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের (পশ্চিম) পরিদর্শক মো. মনির হোসেন এবং ট্রাফিক উত্তর বিভাগের পরিদর্শক (বহদ্দারহাট) উত্তম কুমার দেবনাথ। গাড়ির নম্বর-চট্ট মেট্রো ফ ১১-৩০৬৯। আর গাড়িটির মালিক ও চালক হলেন নুর মোহাম্মদ (৪৮)। তিনি বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তারপুল এলাকার মো. বেলায়েত হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, নুর মোহাম্মদ নিজেই একটি টেম্পু চালান। বাকিটা অন্য যেকোন চালক দিয়ে দৈনিক ভিত্তিতে হিসেব করে টাকা নিয়ে নেন। এছাড়া এ টেম্পুগুলো এক রুটে চলাচল করে না। দুইটা ভিন্ন রুটে চলাচল করায় পুলিশেরও কোন সন্দেহ হয় না। একটি টেম্পুর কাগজ পুলিশ দেখতে চাইলে অপরটির কাগজপত্র দেখানো হয়। এভাবে প্রতিবারই পার পেয়ে যান নুর মোহাম্মদ। শুধু নুর মোহাম্মদ নন, ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকজন টেম্পু মালিক রয়েছেন, তারা এক রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে কয়েকটি টেম্পু রাস্তায় চলাচল করাচ্ছেন।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে ছদ্মবেশে অভিযান করে ডিবির হাতে আটক হয় দুইটি মাহিন্দ্রা টেম্পু ও গাড়ির মালিক। পরে টেম্পু দুইটি ট্রাফিক পরিদর্শক ড্যাম্পিংয়ে প্রেরণ করলেও জালিয়াতির অপরাধে মালিককে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। এতে অন্যান্য টেম্পু মালিকের সন্দেহ বেড়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেম্পু মালিক বলেন, কষ্টের টাকা দিয়ে একটা টেম্পু কিনে সংসার চালাচ্ছি। সরকারকেও যথাযথভাবে টেক্স দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যারা জালিয়াতি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। নুর মোহাম্মদ একটি নম্বর (রেজিস্ট্রেশন প্লেট) দুই গাড়িতে ব্যবহার করেছে। সে অপরাধ করার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হল কেন? নিশ্চয় এখানে অন্য কোন বিষয় রয়েছে। এভাবে হলে কালকে আরেকজন অপরাধ করলে তাকেও ছেড়ে দেয়া হবে।
বহদ্দারহাট ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) উত্তম কুমার দেবনাথ পূর্বদেশকে বলেন, চান্দগাঁও এলাকায় একটি টেম্পুর রেজিস্ট্রেশন প্লেট দুইটি গাড়িতে ব্যবহারের খবর পেয়ে ডিবি অভিযান পরিচালনা করে। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করি। এতে দুইটি গাড়ি তথা মাহিন্দ্রা টেম্পু জব্দ করে ড্যাম্পিংয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। দুইটি গাড়ির ডকুমেন্ট যাচাই বাছাই করে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মহোদয় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তিনি আরও বলেন, কোন একটি পরিবহনকে যখন বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন প্লেট দেয়, তখন সামনে ও পেছনে দেখা যাওয়ার সুবিধার্তে দুইটি প্লেট একসাথে প্রদান করেন। কিন্তু জব্দ করা দুই গাড়িতে সামনের দিকে রেজিস্ট্রেশন প্লেট থাকলেও পেছনের অংশে কোন প্লেট ছিল না। এতে বুঝা যায়, একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্লেট দুই গাড়িতে ব্যবহার করেছে। আমরা এসব গাড়ি পেলে কোন ছাড় দিচ্ছি না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।