রূপালী গীটার ফেলে গেলেন তিনি রয়ে গেলেন

8

বিনোদন প্রতিবেদক
রক লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর ৬০তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৬২ সালের ১৬ই আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা রক সংগীতের এই কিংবদন্তি শিল্পী। শ্রোতাদের হৃদয় জুড়ে এখনো তার বিচরণ নক্ষত্রের আলোর মতই উজ্জ্বলতায়। তিনি ফেলে যাওয়া রুপালি গিটারের কাব্যময়তার প্রতীক আইয়ুব বাচ্চু। রূপালী গীটার ফেলে গেলেন তিনি রয়ে গেলেন। বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলার রক লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু। গুরু আজম খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে হাল ধরেন বাংলা রক মিউজিকের। রক সংগীতকে বাংলার গণমানুষের গানে পরিণত করায় ভক্তদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন বস উপাধি।
কলেজে জীবনে বন্ধুদের নিয়ে গোল্ডেন বয়েজ নামে একটা ব্যান্ডদল গড়ে তোলেন আইয়ুব বাচ্চু, পরে এর নাম পাল্টে রাখা হয় আগলি বয়েজ। বিয়ে বাড়ি, জন্মদিন আর ছোটখাটো নানা অনুষ্ঠানে তাদের এই ব্যান্ডদল গান করতো। আইয়ুব বাচ্চুর বন্ধুরা যে যার মতো একেক দিকে ছড়িয়ে পড়লেও আইয়ুব বাচ্চু ব্যান্ডদল ফিলিংস’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। এরপর ১৯৮০ সালে তিনি যোগ দেন সোলস ব্যান্ডে। এই ব্যান্ডের লিডগিটার বাজানোর দায়িত্বে ছিলেন টানা ১০ বছর। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড এলআরবি।
সংগীতের আঙিনায় আইয়ুব বাচ্চু একাধারে গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়। মূলত রক ঘরানার কণ্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল সংগীত এবং লোকগীতি দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন তিনি। আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠ দেয়া প্রথম গান হারানো বিকেলের গল্প।
আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম রক্তগোলাপ। আইয়ুব বাচ্চুর সফলতার শুরু দ্বিতীয় অ্যালবাম ময়না’র মাধ্যমে। তিনি বেশ কিছু বাংলা ছবিতে প্লে-ব্যাকও করেছেন। এছাড়া অসংখ্য অ্যালবামেও কণ্ঠ দিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু।
রক, বøুজ, জ্যাজ, হেভিমেটাল, শাস্ত্রীয় সংগীতের মত বৈচিত্রময় ঘরানায় বাজিয়ে চিহ্নিত হয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গিটার বাদক হিসেবে। ২০১৮ সালের ১৮ই অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও তার গান বহু যুগ ভেসে বেরাবে বাংলার হাটে মাঠে পথে প্রান্তরে।
কিংবদন্তি এই রক আইকনের ৬০তম জন্মবার্ষিকী (১৬ আগস্ট) উপলক্ষে কোলাহল কমিউনিকেশনের ডিজিটাল প্লাটফর্মে ‘রিমেমবারিং আইয়ুব বাচ্চু’ শীর্ষক স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার চন্দনা। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুর ব্যান্ডসঙ্গী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
এসময় ফেরদৌস আক্তার চন্দনা বলেন, ‘‘আমি আজীবনই মিডিয়ার বাইরে থেকেছি। এসব বুঝি না। বুঝতেও চাইনি। কিন্তু এখন বাচ্চুর স্মৃতি সংরক্ষণ আর ওর এই অমূল্য গানের সংরক্ষণের কাজগুলো আমি আমার দুই সন্তানের পক্ষ থেকে করছি। দায়িত্বগুলো আমার সন্তানের। ওরা যেহেতু বাইরে পড়াশোনা করছে, এজন্য আমি ছুটে বেড়াচ্ছি। এসব কাজ নিয়ে অনেকেই সাপোর্ট দিচ্ছেন। কারও কারও বাঁকা কথাও শুনতে হচ্ছে। ওদের সবাইকে তো আমি জনে জনে ব্যাখ্যা দিতে পারবো না। তানভীর ভাই বাচ্চুর খুব স্নেহধন্য ছিল। তাই তার অনুরোধে এবং সময়ের প্রয়োজনে কিছু কথা বলেছি।”
অনুষ্ঠানে এলআরবির ভবিষ্যৎ, সন্তানদের ইচ্ছে, আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, স্বামী আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে আবেগতাড়িত স্মৃতিচারণসহ নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।